বিয়ের অনুষ্ঠানে টোপর, মুকুট, গাছ কৌটো, বিয়ের পিঁড়ি, তত্ত্বসূচি, সিঁদুর কৌটো সবই লাগে। সব উপকরণই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু এই সমস্ত জিনিসগুলো যদি একটু অন্যরকমের হয়? শিল্পের ছোঁয়া থাকে...তাহলে কেমন হয়? ঠিক এই জায়গায় নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের আর্থিক অবস্থাকে উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এক তরুণী। আরামবাগের কলেজ ছাত্রী অন্বেষা সামন্ত এই দুই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। আরামবাগ ব্লকের মোবারকপুর গ্রামের অন্বেষা ছোটবেলা থেকেই আঁকায় বেশ ভালো। তাই আঁকার মাধ্যমেই প্রতিভাকে ফুটিয়ে তুলছেন তিনি।
এখন ডিজিটালের যুগ আর এই সময়ে ডিজিটাল প্রিন্ট বেশ জনপ্রিয়। মূলত পুজো, বিয়ে বাড়ি, ঘর সাজানোর জিনিস, পোশাক ইত্যাদি প্রায় ২০ রকমের আইটেম সে তৈরি করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজস্ব ব্লগের মাধ্যমে প্রচার করে অর্ডার ও পাচ্ছে দেদার। মোবারকপুর সামন্ত বাড়ির এই মেয়ে প্রান্তিক কৃষক পরিবার থেকে উঠেছেন। বাবা জয়দেব সামন্তের কিছু জমিজমা আছে সেই জমিতেই চাষ আবাদ করে সংসার চালান।
২২ বছরের অন্বেষা আরামবাগ গার্লস কলেজে এডুকেশন অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। বাড়িতে দিদি, ভাই, বাবা মা। দিদি মাস-কম নিয়ে পড়াশোনা করে এখন ইন্টার্ন করছে ভাই এখনও স্কুলের গন্ডি পেরোয়নি। এই অবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আয়ের পথ বেছে নিয়েছেন অন্বেষা।
আরও পড়ুন- west bengal news live updates: ডিগ্রির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন, সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের ডাক্তারির রেজিস্ট্রেশন বাতিল
তাঁর কথায়, "চাকরি বাকরির যা হাল তাতে সেটা পাওয়ার আশা করি না। তার থেকে সৃজনশীল কাজ করে উপার্জন করা অনেক বেশি সম্মানের। কিছুতো পরিবারকে সাহায্য করতে পারি।" বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরস্কার পেয়েছেন অন্বেষা। শুধু জেলার নয়, রাজ্য পার হয়ে ভিনরাজ্য থেকেও তার তৈরি জিনিসের বিপুল চাহিদা। বাংলাদেশেও তাঁর হাতের কাজের কদর আছে, তবে সেখানে অস্থির পরিস্থিতির কারণে সেখানে আর পণ্যসামগ্রী পাঠানো হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্বেষা।
তিনি আরও বলেন, "প্রথমে আমি আঁকা শিখতাম। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম সবাই অনেক কিছু বানাচ্ছে হাতের কাজ, আমি কেনও পারব না, সেখান থেকে শুরু আমার কাজের জার্নি, এই হাতের কাজ কোথাও শেখা কাজ না পুরোপুরি নিজে শিখেছি। অনেক শিল্পীর দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে।
আরও পড়ুন- Dilip -Samik:শমীক BJP সভাপতি হওয়ার পরের দিনেই কী বললেন দিলীপ? আজ-কালেই বিরাট সিদ্ধান্ত?
আমার ছবি আঁকা হাতে ধরে শিখিয়েছেন তারক রায় স্যার, আর আমি একজন গ্রাম এর মেয়ে আমি কোনো দিন ভাবিনি আমি পুরস্কার পাব। রাখি, ডিজিটাল পোট্রেট, পাঞ্জাবি ও লেহেঙ্গাতে নকশা, ফটোফ্রেম, মাটির থালা, গ্লাস, গোপালের অঙ্গরাগ, সব কিছুই পাওয়া যাবে অবশ্যই বাজার থেকে আলাদা ধরণের।" অন্বেষার এই প্রতিভাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ (আরামবাগ লোকসভা) মিতালি বাগ। তিনি বলেছেন, "আমি আনন্দিত, আমার এলাকার একটি ছাত্রী এতো সুন্দর কাজ করছে, সৃজনশীল কর্মে সবরকম ভাবে আমি তার পাশে আছি।"