আমফানের হানায় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বাংলার একাংশ। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলায় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝড়ের দাপটে প্রিয়জন অক্ষত রয়েছে তো? এই আশঙ্কাই কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে অনেকের। এমন কঠিন সময়ে আশার আলো দেখিয়েছে হ্যাম রেডিও।
সুপার সাইক্লোনের ধ্বংসলীলার দু'দিন পরও আপনজনের খোঁজ নিতে না পারায় দুশ্চিন্তায় দিন গুজরান করছিলেন বারাসতের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ কর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপে বাগবাজার এলাকায় তাঁর পরিবারের অন্য় সদস্য়দের বাস। বুধবার ঝড়ের কবলে পড়েছিল সাগর, আর তারপর থেকেই স্ত্রী, ছেলে, বাবা-মা'র সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল রামকৃষ্ণবাবুর।
বিদ্য়ুৎহীন এলাকা, ইন্টারনেট ও টেলি যোগাযোগ ব্য়বস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমন কঠিন সময়ে কাছের মানুষের খবর এনে দিল হ্য়াম রেডিও। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবে হ্য়াম রেডিও অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন রামকৃষ্ণবাবু। এরপর, রেডিও ক্লাবের পক্ষ থেকে দিবস মণ্ডল নামে হ্য়াম রেডিও-র এক সদস্য় সাইকেল নিয়ে সাগরদ্বীপে পাড়ি দিলেন রামকৃষ্ণবাবুর পরিবারের খোঁজ নিতে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ জারি, সরকারের দাবি ৮০ শতাংশ পরিষেবাই সচল
রামকৃষ্ণবাবুর বাড়ির সদস্য়দের ভিডিও মেসেজ নিয়ে তা স্লো স্ক্য়ান টেলিভিশন (এসএসটিভি)পদ্ধতিতে সম্প্রচার করা হল। আর তারপর?
কয়েক ঘণ্টার মধ্য়ে, রামকৃষ্ণবাবু দেখতে পেলেন, তাঁর স্ত্রী, বাবা-মায়েরা তাঁর খোঁজ নিচ্ছেন। আপনজনের কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন। তাঁর বাবা অরবিন্দ কর ছেলের উদ্দেশে বললেন, ''আমরা ঠিক আছি। আমফানের জেরে বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তবে পরিবারের সকলে ভাল আছে। তুমি কেমন আছো?''
আরও পড়ুন: জলের দরে জলে ভেজা বই কাবুলিওয়ালাদের কাছে বিকোচ্ছে আমফান বিধ্বস্ত কলেজ স্ট্রিট
শুধু রামকৃষ্ণ কর নন, বিপর্যস্ত বাংলায় আরও ৭০টি পরিবারকে একইরকম ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে হ্য়াম রেডিও। দিবস মণ্ডলের কথায়, ''দিল্লি, কেরালা, উত্তরাখণ্ড, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, সিকিম-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকেরা তাঁদের বাড়ির খোঁজখবর জানতে আমাদের অনুরোধ করছেন। আমরা বিনামূল্য়ে তাঁদের কাছে খবর পৌঁছে দিচ্ছি''।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকেও সহযোগিতা করেছে হ্য়াম রেডিও। এ প্রসঙ্গে জেলার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ''এলাকা বিদ্য়ুৎহীন। আমাদের মোবাইল ফোন সুইচড অফ হয়ে গিয়েছিল। স্য়াটেলাইট ফোন কাজ করছিল না। ২০ ও ২১ মে হ্য়াম রেডিও-র মাধ্য়মে আমরা জেলা সদর ও অন্য়ান্য় জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। খুব উপকার হয়েছে এতে''।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন