Advertisment

টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী স্ত্রী, ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাচ্ছেন তৃণমূল নেতা

'তৃণমূল ছাড়া কিছুই বোঝেন না আমার স্বামী। সংসারে মন নেই ওঁর। ডিভোর্সের মামলা করছি আমিও।' সাফ বলেছেন তৃণমূল নেতার স্ত্রীও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
As his wife is an independent candidate, tmc leader of maldah englishbazar wants to give divorce notice to his wife

তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী কাকলি চৌধুরী। ছবি: মধুমিতা দে।

মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরী ওরফে সেভেন। তাঁর ওয়ার্ডটি এবার মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই পরিতোষবাবুর এবার আর এই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হওয়া হয়নি। ইংরেজবাজারের ৩ নং ওয়ার্ডের এবারের তৃণমূল প্রার্থী মনীষা সাহা কুণ্ডু। বিপত্তি এখানেই। স্বামী টিকিট না পেলেও আসন্ন পুর নির্বাচনে স্ত্রী কাকলি চৌধুরী টিকিট পাবেন বলে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল। সেটা না হওয়াতেই এবার ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ার সিদ্ধান্ত করে ফেলেন পরিতোষবাবুর স্ত্রী কাকলিদেবী। এতেই বেজায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা সেভেন।

Advertisment

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ, দল যাঁকে টিকিট দেবে তাঁকেই সমর্থন করতে হবে বাকিদের। নির্দলদের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু দলনেত্রীর নির্দেশ উড়িয়ে স্ত্রীর নির্দল হয়ে ভোট ময়দানে নামাটা একেবারেই ভালোভাবে নিতে পারছেন না পরিতোষ চৌধুরী। শেষমেশ স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাবেন বলে ঠিক করেছেন।

স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা সাফ জানিয়েও দিয়েছেন ইংরেজবাজারের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরী। তাঁর কথায়, ''দলের রাজ্য নেতৃত্ব যাঁকে ভালো মনে করেছেন তাঁকেই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়েছে। কিন্তু আমার স্ত্রী এবার  নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আমার বাড়ির দোতলায় থাকি। স্ত্রী নীচের তলায় একাই থাকেন। দলকে ভালোবেসেই স্ত্রীকে পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি তৃণমূলে আছি এবং থাকব।''

উল্লেখ্য, ইংরেজবাজারের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরে শুরু থেকেই নানা বিতর্ক ঘুরপাক খাচ্ছিল। এই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের এবারের প্রার্থী মনীষা সাহা কুণ্ডু। ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় এবার আর এই ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারেননি পরিতোষবাবু। এলাকায় কানাঘুঁষো, পরিতোষবাবুর স্ত্রী কাকলি চৌধুরীরই এবার এই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ার কথা ছিল, তবে তা আর শেষমেশ হয়নি।

শাসকদলের প্রার্থী হতে না পেরে তাই নির্দল হয়ে ভোট ময়দানে কাকলিদেবী। স্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে স্বভাবতই দলের অন্দরে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিদায়ী কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরীকে। পরিতোষ চৌধুরী বলেন, ''এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। আমার স্ত্রীও একসময় এই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। কিন্তু এবার ৩ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন আমার স্ত্রী নির্দলে দাঁড়ানোর পিছনে আমি নাকি দায়ী। এটা সম্পূর্ণ ভুল। দিদির জন্য আমি পরিবার ত্যাগ করেছি। আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করতে চলেছি। ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। রাজনীতির জন্য পরিবার ছাড়তেও রাজি আছি।''

আরও পড়ুন- গরু পাচার কাণ্ডে ED-র জালে এনামুল হক, দফায় দফায় জেরা শেষে গ্রেফতার

অন্যদিকে, পরিতোষ চৌধুরীর স্ত্রী তথা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী কাকলি চৌধুরী বলেন, ''রাজনীতির জন্য পরিবার থেকে সম্পূর্ণভাবে বিমুখ হয়ে গিয়েছেন পরিতোষ চৌধুরী। এই ওয়ার্ডে প্রথম তালিকায় আমার নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে আমার নাম বাদ পড়ে যায়। যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে, মানুষ তাঁকে চেনেন না। আমি এক সময় নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলাম। তবুও এবারে প্রার্থী হতে পারিনি। আমার স্বামী তৃণমূল ছাড়া কিছুই বোঝেন না। পরিবার নিয়ে কোনও ভাবনা নেই তাঁর। এলাকার মানুষ আমাকে বলেছেন নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াতে। তাঁদের অনুরোধেই নির্দল প্রার্থী হয়েছি। আমার সঙ্গে স্বামীর কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রুজু করতে চলেছি।''

এদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী জানিয়েছেন, দলে থেকেও যাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের অবিলম্বে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। ইংরেজবাজারের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে পরিষ্কার করে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

tmc Municipal Election Maldah Divorce
Advertisment