Advertisment

Ranaghat Ashmika: ছোট্ট অশ্মিকাকে সুস্থ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ! সাহায্যের হাত বাড়ালেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ, জারি প্রাণপণ লড়াই

Ranaghat Ashmika: বাবা-মায়ের আদুরে এই ছোট্ট মেয়েটি আর পাঁচটা শিশুর থেকে অনেকটাই আলাদা। স্বাভাবিক ভাবে হাত-পা নড়া চড়া, উঠে বসা, কোন কিছুই সে নিজে নিজে পারে না।

author-image
Sayan Sarkar
আপডেট করা হয়েছে
New Update
ashmika one year old girl child suffering from SMA a rare disease over 3.5 lakh people raise their hand to support the little child

ছোট্ট অস্মিকাকে সুস্থ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ! সাহায্যের হাত বাড়ালেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ, জারি প্রাণপণ লড়াই Photograph: (ফাইল ছবি)

Ranaghat Ashmika: ভারী মিষ্টি নামটা! নিষ্পাপ হাসিতে হৃদয় জুড়িয়ে যেতে বাধ্য। সবে জীবনের একটা বছর পার করতে না করতেই রানাঘাটের ছোট্ট অশ্মিকার জীবনে নেমে এসেছে বিরাট বিপত্তি! আপাতত বাংলা জুড়ে এই একরত্তি শিশুকন্যাকে নিয়ে রীতিমত তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম সর্বত্রই শিরোনামে রানাঘাটের এই 'রাজকন্যা'।

Advertisment

বাবা-মায়ের আদুরে এই ছোট্ট মেয়েটি আর পাঁচটা শিশুর থেকে অনেকটাই আলাদা। স্বাভাবিক ভাবে হাত-পা নড়া চড়া, উঠে বসা, কোন কিছুই সে নিজে নিজে পারে না। বয়স ১ বছর পার হলেও চার-পাঁচ মাসের শিশুর মতই আচরণ তার। কেবলই চেয়ে থাকে, আর মুখে সব সময়ই লেগে আছে মিষ্টি হাসি! কিছু যেন বলতে চায় সে...! 

স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA) টাইপ ওয়ান বিরল রোগে আক্রান্ত অস্মিকা। কলকাতা থেকে চেন্নাই হয়ে ব্যাঙ্গালুরু সব জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছে বাবা-মা, তাদের রাজকন্যাকে সুস্থ করে তুলতে। তবে শেষমেষ ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই। জানানো হয়েছে, কঠিন রোগ সারতে লাগবে ১৬ কোটির ইঞ্জেকশন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকার জোগাড় করা মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে অলীক কল্পনা ছাড়া আর কী'ই বা হতে পারে? অবশেষে ভরসা 'ক্রাউড ফান্ডিং'।  

দেশ-বিদেশের সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষ ইতিমধ্যে ছোট্ট অস্মিকাকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জোগাড় হয়েছে চারভাগের মাত্র এক ভাগ টাকা। এখনো বাকি রয়েছে প্রায় ১২ কোটি। হাতে সময় কম। আদৌ কী মেয়ে কোনদিনও সুস্থ হবে? পারবে আর পাঁচটা শিশুর মত হেঁটে চলে বেড়াতে এই প্রশ্নে রাতের ঘুম উড়েছে অস্মিকার বাবা-মায়ের। 

Advertisment

'তিন মাস বয়স পর্যন্ত বাকি বাচ্চাদের মতোই সবকিছুই স্বাভাবিক চলছিল। পা তুলত, হাত নাড়াত। সাড়ে তিন মাস বয়স যখন হল, তখনই হঠাৎ একদিন দেখলাম পা-টা আর তুলছে না। তিন-চার মাসের বাচ্চাদের ঘাড় শক্ত হয়ে যায় সাধারণত। উবুড় হয়ে যায়। কিন্তু ও কিছুই করতে পারছিল না'। এমনটাই জানিয়েছেন অস্মিকার মা লক্ষ্মী সরকার দাস। 

কী জানালো বাবা-মা

বাবা শুভঙ্কর দাস জানান, 'মেয়ে যখন হয় তখন এত খুশি হই যে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তবে সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মুহূর্তেই সব কিছু বদলে যায়, চোখের সামনে একরত্তি মেয়েটা এত কষ্ট পাচ্ছে আমি নিরুপায়। মানুষ নিজে থেকে এগিয়ে আসছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সকলেই। একাধিক হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্প এগিয়ে এসেছেন, ওর চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদনও জানিয়েছেন। আপাতত ক্রাউড ফান্ডিং ছাড়া আমাদের কাছে কোন বিকল্প নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছুই ভাইরাল হচ্ছে। এমনও জানা গিয়েছে অরিজিৎ সিং মেয়ের চিকিৎসায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন। উনি যদি সত্যিই আমার মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তাহলে ওনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব"। 

তিনি আরও বলেন, "নামি এক চিত্র তারকার কাছে মেয়ের চিকিৎসার প্রচারের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি সেটুকুও করেন নি। এখন আমার সামনে একটাই চ্যালেঞ্জ মেয়েকে সুস্থ করে তোলা"। 

এদিকে অশ্মিকা সুস্থ করে তুলতে আসরে নেমেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশের মানুষ। তালিকাটা দীর্ঘ। মাত্র একদিন আগেই অস্মিকার মা-বাবার হাতে চিকিৎসা খবচ বাবদ একটি চেক তুলে দিয়ে নিজের ফেসবুক লাইভ থেকে একরত্তির সাহায্যে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শাসক বিধায়ক মদন মিত্র।

অশ্মিকা সুস্থ করে তুলতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন 'প্রবাসে ঘরকন্না'র মহুয়া গঙ্গোপাধ্যায়। বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক কৈলাস খের। তিনিও অস্মিকাকে সুস্থ করে তোলার আর্জি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছে। তালিকায় বাদ নেই কিংবদন্তী গায়িকা শুভমিতাও। এত প্রচেষ্টা, লাখো মানুষের প্রার্থনা যেন বিফলে না যায়, সুস্থ হয়ে স্বাভবিক জীবনে ফিরতে পারে ছোট্ট অস্মিকা সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বাংলার মানুষের। 

Ranaghat Ashmika
সাহায্যের হাত বাড়ালেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ, জারি প্রাণপণ লড়াই Photograph: (ফাইল ছবি)

 

Advertisment