Ranaghat Ashmika: বিরল রোগে আক্রান্ত রানাঘাটের শুভঙ্কর দাসের ছোট্ট মেয়ে অশ্মিকা। বাবা-মায়ের আদরের রাজকন্যা জন্ম থেকে আর পাঁচটা শিশুর থেকে অনেকটাই আলাদা। স্বাভাবিক ভাবে হাত-পা নড়া চড়া, উঠে বসা, কোন কিছুই সে নিজে নিজে পারে না। জন্ম থেকেই স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA) টাইপ ওয়ান বিরল রোগে আক্রান্ত অশ্মিকা। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১৬ কোটি টাকা দামের একটি ইনজেকশন। প্রথম কিস্তিতে ৯ কোটি টাকা দিলে পাওয়া যাবে বিরল সেই ইনজেকশন। দীর্ঘদিন ধরে সেই টাকা জমানোর কাজ চলছিল। সোমবার ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে মাতৃ সেনা চ্যারিটেবল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হল অস্মিকার পরিবারের হাতে। এই দিন তাদের হাতে চেক তুলে দেন মাতৃ সেনার সভানেত্রী সোমা ঠাকুর ও অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
অস্মিকার বাবা শুভঙ্কর দাস বলেন, প্রথম কিস্তিতে ৯ কোটি টাকা জমা দিলে ইনজেকশন টা পাওয়া যাবে। আজ ৬০ লক্ষ টাকা পাওয়ায় সেই ৯ কোটি টাকা সম্পূর্ণ হল। তিনি আশা করছেন সমস্ত কাগজ পত্রের কাজ শেষ করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মেয়ে ইনজেকশন পেয়ে যাবে। যারা যারা অস্মিকার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। দেশ-বিদেশের সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষ ইতিমধ্যে ছোট্ট অস্মিকাকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অবশেষে জোগাড় হল ৯ কোটি টাকা। দরকার এখনও ৭ কোটি।
'তিন মাস বয়স পর্যন্ত বাকি বাচ্চাদের মতোই সবকিছুই স্বাভাবিক চলছিল। পা তুলত, হাত নাড়াত। সাড়ে তিন মাস বয়স যখন হল, তখনই হঠাৎ একদিন দেখলাম পা-টা আর তুলছে না। তিন-চার মাসের বাচ্চাদের ঘাড় শক্ত হয়ে যায় সাধারণত। উবুড় হয়ে যায়। কিন্তু ও কিছুই করতে পারছিল না'। এমনটাই জানিয়েছেন অস্মিকার মা লক্ষ্মী সরকার দাস।
বাবা শুভঙ্কর দাস জানান, 'মেয়ে যখন হয় তখন এত খুশি হই যে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তবে সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মুহূর্তেই সব কিছু বদলে যায়, চোখের সামনে একরত্তি মেয়েটা এত কষ্ট পাচ্ছে আমি নিরুপায়। মানুষ নিজে থেকে এগিয়ে আসছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সকলেই। একাধিক হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্প এগিয়ে এসেছেন, ওর চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদনও জানিয়েছেন। ক্রাউড ফান্ডিং ছাড়া আমাদের কাছে কোন বিকল্প ছিল না। আমার মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে যারা এগিয়ে এসেছেন তাদের সকলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ "।