Sandip Ghosh-Avik Dey: আরজি কর কাণ্ডের পর প্রকাশ্যে এসেছে সন্দীপ ঘোষের 'সিন্ডিকেট'! আর এই সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা চিকিৎসক
অভীক দে। দিন যত এগোচ্ছে এই অবীকের বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ সামনে আসছে। তার 'থ্রেট কালচার' যত শুনবেন ততই চমকে যাবেন! বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গভীর রাতে 'গুণ্ডাগিরি' চালিয়ে ক্যান্টিন দখলের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তবে এবার বেশ বিপাকে অভীক। তাকে সাসপেণ্ড করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ওয়েবসাইটে এখনও ক্যান্টিন কমিটিতে জ্বলজ্বল করজে চিকিৎসক অভীক দে’র নাম। ক্যান্টিন মালিক কার্তিক ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি ২০০৯ সাল থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে হাউস স্টাফ ক্যান্টিন চালাচ্ছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে সেই ক্যান্টিন ভাঙা পড়ে। ওই সময়ে চিকিৎসকরা তাঁকে পিজি ক্যান্টিনের দ্বায়িত্ব নিতে বলেন। তারপর থেকেই তিনি সরকারি নিয়ম মেনে পিজি ক্যান্টিন চালাচ্ছিলেন। তিনি দুটি রুম নিয়ে এই পিজি ক্যান্টিন চালাতেন। একটি ছিল মেয়েদের জন্য বরাদ্দ, অন্যটি ছিল ছেলেদের। সারাদিনের পাশাপাশি রাতেও তাঁর ক্যান্টিন খোলা থাকে। সকালে টিফিনে পাওয়া যায় লুচি, রুটি, ম্যাগি, ডিমটোস্ট, ঘুগনি। দুপুরে ভাত, ডাল, সবজির পাশাপাশি মাছ, মটন, চিকেন পাওয়া যায়। রাতে মেলে রুটি, তরকার পাশাপাশি ভাতও।
কার্তিক ঘোষের কথায়, "২০২৩ সালে একদিন গভীর রাতে ডাঃ অভীক দে পিজি ক্যান্টিনে ঢুকে হুমকি দেয়। ক্যান্টিন ছাড়তে ফরমান জারি করে। অভীক দের হুমকির মুখে প্রথমে কিছুই বলতে পারিনি। বিষয়টি পরে জুনিয়র ডাক্তারদের জানাই। কিন্তু অভীক দে এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে সেই সময়ে জুনিয়র বা সিনিয়র ডাক্তারদের কেউই তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার মতো সাহস দেখাতে পারেননি। অভীক দে তার ঘনিষ্ঠ এক যুবককে বেআইনিভাবে ক্যান্টিন চালানোর দ্বায়িত্ব দিয়ে দেন। রাতারাতি নতুন ক্যান্টিনের জন্য লরি করে মালপত্র চলে আসে। আমাকে সরিয়ে দিয়ে ওই জায়গায় মালপত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।"
তবে অভিকের গুণ্ডামীর কাছে বশ্যতা স্বীকার না করে কার্তিক বাবু ক্যান্টিন না ছাড়ার জেদ ধরেন। তখন শেষমেষ তাকে এক কোনায় ছোট্ট এক জায়গায় ক্যান্টিন চালানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। কার্তিক বাবুর আরও অভিযোগ, ক্যান্টিনের মালিক ওই যুবক রীতিমতো কোমরে রিভালবার নিয়ে ক্যান্টিনে বসতেন।
আরও পড়ুন- ভুট্টা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে 'নাতনি'কে ধর্ষণ, 'দাদু'র কুকীর্তিতে ফুঁসছে কাটোয়া
এদিকে আরজি কর কাণ্ডের পর সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হতেই বর্ধমান মেডিক্যালে ওই পাঞ্জাবি যুবকের চালানো ক্যান্টিনের ঝাঁপ রাতারাতি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে প্রায় মাস খানেক হলো ক্যান্টিন বন্ধ আছে। বন্ধ আছে একটি জেরক্সের মেশিনও। ওই জেরক্স মেশিনও ২০২৩ সাল থেকে বেআইনিভাবে চলছে ক্যান্টিনের পাশেই। তবে কার্তিক ঘোষের ক্যান্টিন যথারীতি চলছে।
আরও পড়ুন- হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর লড়াই ধর্ষিতা শিশুকন্যার, ড্রোন উড়িয়ে অভিযুক্তকে ধরল পুলিশ
এবিষয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অভীক দে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে রেডিওলজি বিভাগে আরএমও করেছে। সেই কারণেই ক্যান্টিন কমিটির ওয়েবসাইটে তার নাম রয়েছে। সোমবার তার নাম সাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।"