Baghajatin Building Collapse case: বাঘাযতীন কাণ্ডে ২ দিনের মধ্যে গ্রেফতার অভিযুক্ত প্রোমোটার সুভাষ রায়। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বকখালির একটি রিসর্ট থেকে বৃহস্পতিবার ওই প্রোমোটারকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। বাঘাযতীনে যে চারতলা ফ্ল্যাটবাড়িটি ভেঙে পড়েছে সেটার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই প্রোমোটার। ফ্ল্যাটবাড়ির একাংশ ভেঙে একদিকে হেলে পড়ার পর থেকে প্রোমোটার পলাতক ছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা ওই চারতলা ফ্ল্যাটবাড়ি একদিকে হেলে পড়ে। ফ্ল্যাটবাড়িটি সোজা করার কাজ চলাকালীন সেটি ফাঁকা করে দেওয়ায় প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে। যাদবপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "এই ফ্ল্যাটবাড়িটি নির্মাণের ক্ষেত্রে আদৌ অনুমোদন আছে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। এটা কলোনি এলাকা। এই কলোনি এলাকায় কোনও ফ্ল্যাটবাড়িরই অনুমোদন নেই। সিপিএমের আমলে এমন অনেক বাড়িই নির্মাণ হয়েছিল।"
কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর কলোনিতে অবস্থিত বাঘাযতীনের ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই ফ্ল্যাটটি নির্মাণ করেছিল প্রোমোটার। নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে তৈরি হয়েছিল ফ্ল্যাটবাড়িটি। সেই কারণেই এভাবে হঠাৎ এটি একদিকে হেলে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি জলাভূমি বুজিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের আধিকারিক-কর্মীদের চূড়ান্ত গাফিলতিকেই দায়ী করছেন এলাকার বাসিন্দারা। ওই চারতলা ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে উঠেছে ভুরি-ভুরি অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগেই ওই ফ্ল্যাটবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল।
আরও পড়ুন আগেই হেলে পড়েছিল বহুতলটি, বাঘাযতীনের ফ্ল্যাটবাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হতেই নয়া আতঙ্ক!
এদিকে, বুধবার সকাল থেকেই ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করে দিয়েছেন পুরসভার কর্মীরা। এদিকে ফ্ল্যাটবাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন আশপাশের মানুষজন। এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটবাড়ি রয়েছে। সেগুলির নির্মাণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর গাফিলতির অভিযোগ। ভবিষ্যতে এই এলাকায় আরও কোনও বড় বিপদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
অভিযুক্ত প্রোমোটারকে ঘটনার পর থেকেই খুঁজছিল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের একটি দল যায় বকখালি। সেখানে আপনজন নামে একটি রিসর্ট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিন বাঘাযতীনে ঘটনাস্থলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বহুতলটি ধীরে ধীরে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন পুরকর্মীদের। মেয়র বলেন, গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার চেষ্টা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিপত্তি ঘটে। তিনি ঘটনার দায় চাপিয়েছেন পূর্বতন বাম সরকারের উপর। পাশাপাশি তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বাস দিয়েছেন, পুরসভা এবং রাজ্য সরকার তাঁদের পাশে আছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের যথাযথ সাহায্য করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।