যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে এবার শোরগোল ফেলে দিলেন অধ্যাপিকা তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মিম ছড়িয়ে সম্মানহানি করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ জানিয়ে লালবাজারের সাইবার সেলের দ্বারস্থ হয়েছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বৈশাখী। ওয়েবকুপার সদস্যদের বিরুদ্ধে মিম ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন বৈশাখী। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও অভিযোগ জানিয়েছেন শোভনের বান্ধবী। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পার্থ।
আরও পড়ুন: বৈশাখী ‘নতুন বউ’! শোভন কী বললেন দিলীপকে?
ঠিক কী অভিযোগ বৈশাখীর?
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মিম ছড়িয়ে তাঁর সম্মানহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈশাখী। তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘পলিটিকাসে’ অপমানজনক, নিন্দনীয় মিম ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈশাখী। ‘নারী বিরোধী এ ধরনের পোস্ট’ তাঁর যৌন হেনস্থার সামিল বলে অভিযোগ করেছেন বৈশাখী। এ প্রসঙ্গে শোভন-বান্ধবী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকতে পারে, তরজা থাকতে পারে। কিন্তু, আমরা যেহেতু শিক্ষাক্ষেত্রের মানুষ, তাই কিছুটা রুচিবোধ হয়তো আশা করা যায়। গত ক’দিন ধরে আমার সহকর্মীরা মিম ফরোয়ার্ড করছেন, যা অত্যন্ত নিম্নমানের। এক মহিলার আত্মমর্যাদায় লাগার মতো করে ব্যাথিত করে এটা’’। উল্লেখ্য, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ থাকাকালীন ওয়েবকুপার সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন ছিলেন বৈশাখী। এবার সেই সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধেই বৈশাখীর এমন অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষামহলে।
আরও পড়ুন: মুকুলের খেলা? দেবশ্রীকে কে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি দফতরে, রহস্যভেদ করলেন বৈশাখী!
আরও পড়ুন: মমতা কখনও প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলেননি, বৈশাখীর গলায় ‘বোধোদয়ের’ সুর
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি কোনও অভিযোগ করে থাকে, তা দেখব, শিক্ষা সংক্রান্ত হলে অবশ্যই দেখব’’। ওয়েবকুপার রাজ্য সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু জানিয়েছেন, ‘‘ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ওয়েবকুপার অফিসিয়াল গ্রুপ নয়। এটা অধ্যাপকদের গ্রুপ। তবে এটা যাঁরা করেছেন, তা অবশ্যই নিন্দনীয়। যে মিম করা হয়েছে এবং ফরোয়ার্ড করা হয়েছে, সেগুলির সূত্র বের করে আনা হোক’’।
এক্সক্লুসিভ শোভন: মমতাকে তৈরি করতে সব নষ্ট করে জীবন দিয়েছিলাম, আর উনিই রাজনীতি করলেন
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগদানের কিছুদিন আগেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে চাকরিতে ইস্তফার সিদ্ধান্ত জানান বৈশাখী। এ জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশে বসে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বৈশাখী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘দিদিকেই বলতে চাই। আপনি কি সত্যিই নির্দেশ দিয়েছেন যে, সাম্প্রদায়িক তকমা দিয়ে আমার চাকরি খেয়ে নেবেন? নাকি আপনার নাম করে অন্য কেউ এসব বলছেন’’। এরপরই মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে ইস্তফা দেন বৈশাখী। যদিও তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি শিক্ষামন্ত্রী। এ নিয়ে টানাপোড়েন চলে। এরপরই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন বৈশাখী। কিন্তু সেখানেও ছন্দপতন ঘটে। সম্মানহানির অভিযোগ তুলে গত শনিবারই বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বৈশাখী। এই প্রেক্ষিতে বৈশাখীর এহেন অভিযোগ নতুন মাত্রা এনে দিল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।