Advertisment

Barasat Mob Lynching: 'আগে যাচাই করো, তারপর মারো', ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনি থেকে বাঁচতে কাতর আর্তি মহিলার!

Rumours of Child Kidnap: ছেলেধরা গুজবে গণধোলাই। রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে এই ঘটনা। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। সোশ্যাল মিডিয়া তো বটেই এমনকী এলাকায় লিফলেট বিলি করে এব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Barasat Mob Lynching victim women admitted hospital and speaks the whole story, ছেলেধরা সন্দেহে বারাসতে গণপিটুনি

Barasat Mob Lynching: ছবির বাঁদিকে গণপিটুনির শিকার সেই মহিলা। ডানদিকে, গুজব রুখতে পুলিশের লিফলেট বিলি।

Barasat Mob Lynching: বাচ্চা চুরির গুজব ঘিরে তোলপাড় কাণ্ড উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। বারাসত জেলা পুলিশ লিফলেট বিলি করে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছে, গুজবে কান না দেওয়ার। বারাসতে কোনও বাচ্চা চুরির ঘটনাই ঘটেনি। মূলত কাজী পাড়ায় ১১ বছরের এক শিশু খুন হওয়ার ঘটনার পর থেকে গুজব ছড়াতে থাকে সামাজিক মাধ্যমে। তা ছড়িয়ে পড়ে সাধারণের মধ্যে। এরই মধ্যে তিনজনকে বাচ্চা চুরির অভিযোগে গণপিটুনির অভিযোগ ওঠে। বারাসত হাসপাতালে তাঁরা গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তাঁর মধ্যে আবদালপুরের যুবক শেখ খালিদ কথা বলার মতো অবস্থাতেও নেই। বুধবার আমডাঙার বাসিন্দা মেহেরা বিবি গুজবের শিকার হন। তাঁকে গণধোলাই দেওয়া হয়। তাঁর কোনও কথাই শোনা হয়নি। এখন তিনিও বারাসত হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

Advertisment

সেদিন কী ঘটনা ঘটেছিল? হাসপাতালে শুয়েই রোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিলেন জখম মেহেরা বিবি। তাঁর কথায়, "
আমার শরীরিক সমস্যায় থাকায় অনেক জায়গাতেই ছুটে বেরিয়েছি। আমি খবর পাই, গোলাবাড়িতে বড়মল্লিক পাড়ায় জাকির মৌলবী সাহেব আছেন। আমার একা যাওয়ার ক্ষমতা নেই। মধ্যমগ্রামের আবদালপুরে বাড়ি শেখ খালিদের। সম্পর্কে দেওর হয়। ওকে বললাম ভাই এমন একটা জায়গার খোঁজ পেয়েছি। আমাকে নিয়ে যাবি? ও বলল, ভাবী সময় পেলে আমি নিয়ে যাব। সেখানে গিয়েছিলাম। মৌলবী সাহেব তাবিজ, কবজ দিয়েছেন। ভাই বলে, কাজি পাড়ায় আমি নেমে যাব। ওখান থেকে বাড়ি চলে যাব। ৬ টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। আমার স্বামী অন্য একজনকে নিয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমার দুটি বাচ্চা। এমনিতেই মন মেজাজ ভালো নেই। কিছু খেয়ে বাড়ি থেকে বের হইনি। দেওর খাওয়ার জন্য জোর করছিল। আমরা কাজি পাড়ায় একটা স্কুলের সামনে নামি।"

তিনি আরও বলেন, "ওখানে কোনও খাবারের দোকান পাইনি। এখান থেকে ঘুরে অন্য জায়গায় যেতে হবে। তখন সেখানে একটা বউ স্কুলের বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছিল। ওখানে তখন দু'জন টোটোওয়ালাও ছিল। তাঁদের একজন জিজ্ঞেস করে, "তোমার বাড়ি কোথায়।" তাঁর দোহারা চেহারা। আমি বলি আমডাঙা থানা এলাকায়। বলে, "এখানে কি করতে এসেছেন?" তাঁকে বললাম দরকারে এসেছি। কিছু খাবার জন্য নেমেছিলাম। আবার টোটোচালক বলছে, "এখানে কি করতে এসেছি।" তাবিজ, কবজ নিতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে এসেছি। আমি বলি, ফোন করে দেখ। প্রথম থেকেই বলতে শুরু করে, "এদের ধর। মারধর দে।"

আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: প্রাক বর্ষার বৃষ্টিতে জ্বালা জুড়োল দক্ষিণবঙ্গে! আজই অতি ভারী বৃষ্টি কোন কোন জেলায়?

হাসপাতালের বেডে শুয়ে জখম মহিলা বলেন, ''আমি ওদের বলি আমার পরিবার আছে। তাঁরা আসুক। আমার বাড়ি আমডাঙায়। আমার দত্তপুকুরে বিয়ে হয়েছে। আমডাঙা থানা থেকে পুলিশ আসুক। আমাদের বিধায়ক আছেন। তিনি আসবেন। খোঁজ নিয়ে যাচাই কর, চোর কিনা। আমাদের ছোঁবে না। তারপর মারধর করো। আটকে রেখে দাও। বলছে আটকানোর গুলি মেরেছে। টোটোওয়ালা বলে, "এখানে রেগুলার বাচ্চা চুরি হচ্ছে। ৭-৮টা বাচ্চা চুরি হয়ে গিয়েছে। তোদের শেষ করে দেব।" তারপর মার। টোটোচালকরা লোক ডেকে মারতে শুরু করে। কে শোনে কার কথা।"

আরও পড়ুন- Durga Puja 2024: পটুয়া পাড়া জুড়ে যেন অকাল শরৎ, পুজোর প্রস্তুতি পুরোদমে, ফ্লোরিডা পাড়ি দিল প্রতিমা

এদিকে, গণধোলাই ও সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। রাস্তায় নেমে গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে পুলিশ মাইকিংও করেছে। বারাসত এলাকায় ছেলেধরা গুজবে কান দেওয়া দায়। এই গুজবের শিকার হচ্ছেন একেবারে সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ। অপপ্রচারে কান না নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বারাসত জেলা পুলিশ। খোদ কলকাতা সংলগ্ন শহর এলাকায় যেভাবে গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, তাতে উদ্বিগ্ন অভিজ্ঞমহল।

আরও পড়ুন- Premium: দুরন্ত গতিতে চলছে রথ তৈরির কাজ, দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন কবে? 

police West Bengal North 24 Pargana Barasat Mob Lynching
Advertisment