Advertisment

জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র বারাসাত, গুরুতর আহত ৪ পুলিশকর্মী

পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন তৃণমূল কর্মী স্বপন চক্রবর্তী ওরফে ঠাকুরকে রাত আটটা নাগাদ দ্বিজহরিদাস কলোনির একটি ক্লাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই হানা দেয় পুলিশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রাতভর জনতা পুলিশ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের দ্বিজহরিদাস কলোনি। বৃহস্পতিবার রাতে এখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে লাগাতার ইটবৃষ্টি। ছোঁড়া হয় বোমাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল। ঘটনায় আহত হন ২৫ জন বাসিন্দা। পুলিশ তরফ থেকে জানানো হয়েছে, একটি অপহরণের খবর পেয়ে ওই এলাকায় যায় পুলিশ। কিন্তু, স্থানীয় জনতার হাতে আক্রান্ত হতে হয় বাহিনীকে।

Advertisment

আরও পড়ুন ওদের বিজয় মিছিল হবে না, আমাদের শান্তি মিছিল হবে, পুলিশকে নির্দেশ মমতার

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূল অভিযোগ করছিল, বিজেপি কর্মীদের ভয়ে ঘর ছাড়তে হয়েছে বেশ কিছু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই উত্তর চব্বিশ পরগনারই নৈহাটিতে ঘরছাড়া দলীয় কর্মীদের ঘরে ফেরাতে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তৃণমূলের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন তৃণমূল কর্মী স্বপন চক্রবর্তী ওরফে ঠাকুরকে রাত আটটা নাগাদ দ্বিজহরিদাস কলোনির একটি ক্লাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, বিজেপির কর্মীরা তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। খবর পেয়ে বারাসত থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তৃণমূল কর্মীকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। এ সময় কম সংখ্যক পুলিশকর্মী থাকায় পিছু হঠে বাহিনী। ততক্ষণে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয় দলের কর্মীরাই অশান্ত হয়ে ওঠে। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের তরফ থেকে বিশাল বাহিনী নামানো হয়।

আরও পড়ুন ‘নীতি আয়োগের কোনও ক্ষমতা নেই, তাই যাচ্ছি না’, মোদীকে জানালেন মমতা

অভিযোগ, পুলিশ যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে সেজন্য পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ইটবৃষ্টি, বোমাবাজি করতে থাকে বিজেপি এবং এলাকার বাসিন্দারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরপরই লাঠিচার্য শুরু করে পুলিশ। এমনকি জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়। জনতা পুলিশের এই সংঘর্ষে চার পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হন। প্রাথমিক অবস্থায় তাঁদের বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে দু'জন পুলিশকর্মী হারান চন্দ্র সরকার এবং অজয় দাসের অবস্থা গুরুতর। প্রথমে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হলেও শারীরিক পরিস্থিতি আরও আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয় তাঁদের।  বারাসতের এই খন্ডযুদ্ধে আহত হন এলাকার ২৫ জন বাসিন্দা।

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দশ জনকে গ্রেফতার করেছে বারাসত থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বারাসত এবং পার্শ্ববর্তী থানার আইসি, ওসি-সহ উচ্চ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী। কিন্তু উত্তর চব্বিশ পরগণার বারাসতে এসপি অফিস লাগোয়া এই কলোনিতে কীভাবে এতোদিন ধরে পুলিশের চোখ এড়িয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা মজুত ছিল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

উল্লেখ্য, গতকালই সন্ধ্যায় নিমতার নিহত তৃণমূলকর্মী নির্মল কুণ্ডুর বাড়ি থেকে ফেরার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি লক্ষ্য করে 'মোদী, মোদী' স্লোগান তোলেন কিছু জনতা, শোনা যায় 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনিও। এই ঘটনার ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই জনতা পুলিশ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে হয়ে বারাসত। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এদিনের ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগজনক বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

police West Bengal
Advertisment