আজই মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস অফিসিয়ালি সাংবাদিক বৈঠকে আগেই বলে দিয়েছে জিতলেই বায়রন বিশ্বাসের অনুভূতি হবে। তাহলে বিরোধীরা প্রার্থী দিয়েই বা কি করবে? এখনও এই ন্যারেটিভ তৈরি করে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্ররা। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে নির্বাচন করার কোনও প্রয়োজন কি আছে? নির্বাচন মিটলেই কি ঘরে ফেরার পালা শুরু হবে? এই চর্চাও চলছে সর্বত্র। এ যেন সিঁদুরে মেঘ দেখার দশা বাংলার রাজনৈতিক মহলে।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দলে দলে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপির বিধায়ক প্রার্থী হয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রে গোহারা হেরেছেনও। তবু তাঁরা ফের ফিরে গিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। জয়ীরাও কেউ কেউ ফিরেছেন তৃণমূলে। সব্যসাচী দত্ত থেকে রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস থেকে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। উদাহরনের অন্ত নেই। এবার পঞ্চায়েতেও কি সেই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসেও যোগ দিয়েছেন দলের পঞ্চায়েত ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের একাংশ। ভোটের পর এরাও কি সব্যসাচী বা বায়রন হয়ে যাবেন? সেই প্রশ্নই উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন- নতুন দল গড়ে পঞ্চায়েতের লড়াইয়ে সিবিআই-ইডি-র নজরে থাকা প্রাক্তন সেই তৃণমূল নেতা
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সিপিএমের সমর্থনে জয়ী কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস মাত্র তিন মাসের মধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বলেছেন তিনি তো তৃণমূলেই ছিলেন। এই বিধায়ক শপথ নিয়েছেন কিন্তু বিধানসভার একটা অধিবেশনেও যোগ দেওয়ার সুযোগ পাননি। জিতলেন হাত চিহ্নে বিধানসভায় হাজির হবেন তৃণমূলের বিধায়ক হিসাবে। আর বায়রনের দলবদলকে হাতিয়ার করেই বিরোধীদের হুঁশিয়ার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন তাহলে ভোটের প্রয়োজন কিসের?
রাজনৈতিক মহলের মতে, ক্ষমতা ধরে রাখতে একাধিক কৌশল অবলম্বন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড়, মালদার রতুয়া, সুজাপুরসহ নানা অঞ্চল, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে তৃণমূল থেকে বিজেপি, কংগ্রেসে যোগদান করছে। ২০১৮ পঞ্চায়েতে মনোনয়নের মতো এ যেন ২০২১-এর দলবদলের আরেক প্রতিচ্ছবি। এই দলবদলু তৃণমূলীরা জয়ী হোক বা পরাজিত হোক রাজনৈতিক মহল সেই রাজীব, সব্যসাচী, বায়রনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে।