২১ অগাস্ট ২০১৯, পূর্ব মেদিনীপুরের উদয়পুরে হঠাৎই চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম ধাক্কায় দোকানদার ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কি তাঁর চায়ের দোকানে চা খেতে এসেছেন। তিনি কি ঠিক দেখছেন! কিন্তু মুহূর্তে ভুল ভাঙে তাঁর। চা পান করতে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই চা তৈরি করতে শুরু করেন। সেই দৃশ্যই ফের দেখা গেল বীরভূমে। এর আগে তিনি বীরভূমে দায়ের দোকানে ঢুকে তরকারি রান্না করেছেন। দার্জিলিংয়ে ফুচকা দেওয়া থেকে মোমো তৈরি করতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। জনসংযোগের ধারা বজায় রেখেছেন মমতা।
দলীয় নেতা-কর্মীদের জনসংযোগের ওপর বারে বারে জোর দিতে বলেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামে গ্রামে পাঠাচ্ছেন মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ক থেকে দলীয় নেতাদের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগের ধরার কাছে দলের শীর্ষ থেকে স্থানীয় নেতৃত্ব একেবারেই ফিকে। বীরভূমে প্রশাসনিক সভার পর ফের চায়ের দোকানে চা বানালেন। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বানানো চা খেয়ে যারপরনাই খুশি সকলেই। তরুণী চা দোকানির কাছ থেকে পরিবারের সুখ-দুঃখের খবরও নিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
৩০ ডিসেম্বর ২০২০, এই বীরভূম জেলা থেকে ফেরার পথে আদিবাসী গ্রামে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন। তারপর সেই দোকানে ঢুকেই খুন্তি নাড়তে থাকেন। বল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দারা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে আলু-বরবটির তরকারি রান্না করতে দেখে অবাক হয়ে যান। গত বছর ৩১ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে মোমো বানিয়েছেন। তারপর ওই বছরই ১২ জুলাই পাহাড়ের রাস্তার পাশে হঠাৎই ফুচকার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ফুচকায় আলুমাখা মশলা ও তেঁতুলের টক জল দিয়ে নিজের হাতে বিলি করতে থাকেন। সেদিন বাংলাদেশের জনৈকি অতিথি ও শিশুদের ফুচকা নিজেই বিলি করেছেন তিনি। এরপর ১৪ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিংয়ের রাস্তায় প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে মোমো বানান। মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো দোকানের অন্য কর্মীদের সঙ্গে বেঞ্চে বসে চাকি-বেলনা হাতে নিয়ে ময়দা বেলতে থাকেন। বানান মোমো।
গতবছর ৩০ নভেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার টাকি খাঁ পুকুর পঞ্চায়েতের স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যখন ঘরের অযাচিত অতিথি তখন আর কি করা যায়। তাঁকে ভাত খেয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন নমিতা। গৃহকর্তীর আবদার মেনে উঠোনেই প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে পড়েন তৃণমূল সুপ্রিমো। স্টিলের থালা হাতে নিয়ে ট্যাংরা মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খান মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের সঙ্গে তাঁর হাজার রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকতে পারে কিন্তু জনসংযোগে তৃণমূল সুপ্রিমোকে টেক্কা দেওয়া যে সহজ নয়, তিনি তা বারে বারেই প্রমান করছেন।