ব্যান্ডেলের বনমসজিদ পাড়ার আম্রপালি রায়ের আক্ষেপ ছিল মাত্র ৫০ জনের উপস্থিতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। দুই মনের মানুষের একাত্ম হওয়ার সামাজিক অনুষ্ঠানে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের আশীর্বাদ পেতে উদগ্রীব ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আম্রপালি। করোনা আবহে সুরাহা পেতে তাই নয়া টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলে ফেললেন তিনি। তারপর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে বিয়েবাড়িতে হাজিরার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে আবেদন করলেন। শনিবার রাজ্যের নয়া করোনা বিধিতে বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে হাজিরায় নতুন ছাড়ের ঘোষণায় স্বভাবতই আন্দন্দে আত্মহারা হুগলির আম্রপালি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি ঋণি বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন আম্রপালি।
শনিবার নবান্নের তরফে নতুন নির্দেশিকায় বিয়ে বাড়ি ও মেলার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ খানিকটা শিথিল করা হয়েছে। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এবার থেকে বিয়ে বাড়িতে সর্বোচ্চ ২০০ জন বা ম্যারেজ হলের ৫০ শতাংশ হাজির থাকতে পারবেন। তবে এর মধ্যে সব থেকে কম যেটা সেই সংখ্যক অতিথি হাজির থাকতে পারবেন। এর আগে বলা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৫০ জন হাজির থাকতে পারবেন বিয়ের অনুষ্ঠানে। বিয়ের মরশুমে রাজ্য সরকারের নয়া ঘোষণায় বেজায় খুশি সাধারণ মানুষও।
নতুন নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন মিষ্টি ওরফে আম্রপালি। তাঁর কথায়, 'আমার কাছে এই ঘোষণা অবিশ্বাস্য, এটাও সম্ভব!' এই ঘোষণায় মুখ্যমন্ত্রীর আবেগি মন ছুঁয়ে গিয়েছে এই তরুণীর কাছে। আম্রপালির কথায়, 'আমার টুইটারে অ্যাকাউন্টও ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব বলেই টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলি। আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটার হ্যান্ডেলে গিয়ে আবেদন করি যাতে হাজিরার সংখ্যা ৫০ জন থেকে বিয়েবাড়ির ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ৫০ শতাংশ করেন। সাধারণত জীবেন এমন অনুষ্ঠান একবারই হয়। ৫০ জনের হাজিরায় অনুষ্ঠান প্রায় অসম্ভব। আমরা যে বিয়েবাড়িতে অনুষ্ঠান করি তা যথেষ্ট বড়।' তাছাড়া যাঁরা বিয়েবাড়িতে আসবেন তাঁরা করোনা বিধি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন বলেই অভিমত তাঁর।
রাজ্য সরকারের করোনা বিধির নির্দেশিকা ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল ছিল। ফের শনিবার নতুন নির্দেশিকা জারি করে নবান্ন। তাতেই বিয়েবাড়ির ক্ষেত্রে হাজিরায় ছাড় দেওয়া হয়। বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত সাতাশ বর্ষীয় তরুণী বলেন, 'শনিবার দুপুরে নতুন ঘোষণা শুনে আমার 'মিরকল' মনে হচ্ছিল। অজশ্র ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক পদক্ষেপে আমি আপ্লুত। এভাবে এত সহজে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানো যায়, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আবেগের মূল্য দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
আগামি ২৪ জানুয়ারি বৈদ্যবাটির শান্তনু দে-র সঙ্গে নতুন জীবনে প্রবেশ করতে চলেছেন আম্রপালি। এখন খুশির মহল হুগলির ব্যান্ডেলের রায় পরিবারে।