কোনও রোগীর মৃত্যু করোনাভাইরাসে হয়েছে কিনা তা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল রাজ্য সরকার। কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হলে সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এবার থেকে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠাতে হবে। সরকার গঠিত কমিটি এখন থেকে খতিয়ে দেখবে যে মৃত ব্যক্তির করোনার সংক্রমণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে কিনা? স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত নির্দেশিকায় এমনটাই জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দু-দুবার সরকারি তথ্য সামনে আসে। ‘বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩', গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এমন তথ্যই জানান আধিকারিকরা। কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় ফের সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানিয়েছিলেন যে, '৫৩ নয়, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪'। মাত্র কয়েক ঘণ্টার তফাতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এমন ‘বিভ্রান্তি’ ঘিরে প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেতে শুরু করে।
আরও পড়ুন- মহেশতলায় পিপিই তৈরির মহাযজ্ঞ
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যানমন্ত্রকের তরফে অনলাইনে যে তথ্য আপলোড করা হয় সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় করোনা আক্রান্ত ৮০ জন। শনিবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, 'রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৪৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।' মোট ৬৪ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ১২ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। এরপরই রবিবার পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিই খতিয়ে দেখবে কোনও রোগীর আদৌ করোনাতে মৃত্যু হয়েছে কিনা।
আরও পড়ুন- লকডাউনে মুশকিল আসান, বাড়ি বাড়ি স্যানিটারি প্যাড পৌঁছচ্ছে এসএফআই
এই পাঁচ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন, ডঃ বি আর শতপতি (স্বাস্থ্য-পরিবার কল্যাণ দফতরের উপদেষ্টা), ডঃ প্লাবন মুখোপাধ্যায় (অধ্যাপক ও সিটিভিএস মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান), ডঃ আশুতোষ ঘোষ (অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান- ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন, এসএসকেএম), ডঃ জ্যোতির্ময় পাল (মেডিসিন বিভাগ, আরজিকর), দেবাশিস ভাট্টাচার্য (ডিরেক্টর, মেজিক্যাল এডুকেশন)। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, 'করোনভাইরাস সংক্রমণের কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে, নাকি অন্য কোনও কারণে? তা নির্ধারণ করবে এই কমিটি। এতে অস্পষ্টতা দূর হবে।'
রাজ্যে করোনায় মৃত্যু নিয়ে যে বিভ্রান্তি দেখা গিয়েছিল তাকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা লুকোতে চাইছে রাজ্য সরকার। অভিযোগ নস্যাৎ করে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, 'যা জনগণকে জানানোর প্রয়োজন নেই তা জানানো হচ্ছে না। প্রত্যেকের সবকিছু জানার দরকার নেই।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন