Advertisment

ভিন রাজ্যে ঠিকাদারের অত্যাচার, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের ত্রাতা হ্যাম রেডিও অপারেটররা

আনলক পর্বে কেরালায় ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতে গিয়ে বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা হল ওই যুবকের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা আবদুল হালিম ও তাঁর সন্তান।

লকডাউনে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ পেয়েছিলেন রাজ্যে। কিন্তু কিছুদিন পর সেটা বন্ধ হয়ে যায়। সংসারের হাল টানার তাগিদে ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিক অবদুল হালিম। কিন্তু সেটাই কাল হয়েছিল তাঁর। আনলক পর্বে কেরালায় ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতে গিয়ে বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা হল ওই যুবকের। শেষপর্যন্ত ওই ঠিকাদারের কৃতদাসত্ব থেকে মুক্তি পেলেন আবদুল। পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাব এবং কেরালার হ্যাম অপারেটর ও সর্বপরি বারাকপুর নিবাসী প্রাক্তন পুলিশকর্তার সহযোগিতায় ঘরে ফেরার বন্দোবস্ত হল আবদুলের।

Advertisment

ঘটনার সূত্রপাত মাস দেড়েক আগে। বারাকপুরে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করতে আসে সুতির বাসিন্দা আবদুল। বাড়িতে স্ত্রী ও এক দুধের শিশু রয়েছে। বারাকপুরে এসে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা দীনেশ হালদারের বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন আবদুল। কিন্তু কয়েকদিন পর সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সংসারের হাল টানতে তখন কেরালার এর্নাকুলামে এক বন্ধুর সূত্রে ঠিকাদারের কাছে কাজ পান তিনি। সেখানে গিয়েও একই ছবি। আট দিন পর রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, মুর্শিবাদাবাদের বাড়িতে স্ত্রী-শিশুর জন্য মন খারাপ হয় আবদুলের। অগত্যা বাড়ি ফিরতে চেয়ে ঠিকাদারকে জানান তিনি। তখনই বেঁকে বসে ঠিকাদার। পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বাড়ি ফেরা হবে না। যতদিন না কাজ চালু হচ্ছে এখানেই থাকতে হবে। আবদুলের আধার কার্ডও কেড়ে রেখে দেয় ওই ঠিকাদার।

আরও পড়ুন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে রণক্ষেত্র মুঙ্গের, পুলিশের গুলিতে নিহত স্থানীয় বাসিন্দা

এদিকে, বাড়ি ফেরার জন্য আকুল হয়ে পুরনো বাড়িওয়ালা দীনেশ হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আবদুল। আবদুলের কাছে বস শুনে ঠিকাদারকে ফোন করেন দীনেশবাবু। কিন্তু ঠিকাদার কথা শুনতে রাজি নন। এরপর আবদুলকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেয় ওই ঠিকাদার। বাধ্য হয়ে দীনেশবাবু ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুরো ঘটনা জেনে এর্নাকুলামের পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন অম্বরীশবাবু। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে শেষে কেরালার হ্যাম রেডিও অপারেটর সহযোগীদের ফুরো ঘটনা বলেন তিনি। পেশায় আইনজীবী ও হ্যাম অপারেটর বিষ্ণু রাও এরপর ঠিকাদারকে ফোন করে অবিলম্বে আবদুলের আধার কার্ড ও ফোন ফেরত দিতে বলেন। নাহলে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।

publive-image কেরালায় পরিযায়ী শ্রমিককে উদ্ধার করেন হ্যাম রেডিও অপারেটররা।

এদিকে, দীনেশবাবু আবদুলের বাড়ি ফেরার প্লেনের টিকিটের বন্দোবস্ত করে কেরালায় ওই হ্যাম অপারেটরকে পাঠান। এরপর একদিন বিষ্ণু এবং তাঁর তিন সহযোগী সানি, সাজ্জির এবং শিবুকে নিয়ে ঠিকাদারের আস্তানায় হাজির হন। বাধ্য হয়ে আবদুলকে ছাড়েন ওই ঠিকাদার। হ্যাম রেডিও অপারেটর এবং প্রাক্তন পুলিশকর্তার সৌজন্যে শেষপর্যন্ত কেরালা থেকে দিল্লি হয়ে আজ, মঙ্গলবার রাতের বিমানে কলকাতায় ফিরছেন আবদুল। বিপদের মধ্যে সবাই রক্ষাকর্তা নাহলে আজ বাড়ি ফিরতে পারতেন না মানছেন আবদুল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

kerala Ham Radio
Advertisment