লোকসভা ভোটের বাজারে সদ্য নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে ঠাঁই পেয়েছে নোট বাতিল, কর্মসংস্থান, জিএসটির মতো ইস্যুগুলি। সূত্রের খবর অনুযায়ী বুধবার দলের ইস্তেহার প্রকাশের সময়েই কেন্দ্র থেকে পাঠানো প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (পিএমজেএওয়াই)-র টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এত বড় সরকারি স্বাস্থ্য বিমা সারা বিশ্বেই বেনজির।
কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের জন্য রাজ্যে প্রেরিত ১৬২.০৬ কোটি টাকা কেন্দ্রকে গত বুধবারই ফিরিয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মাস খানেক আগেই কেন্দ্র থেকে রাজ্য কে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্রের প্রকল্পভুক্ত না থাকতে চাইলে রাজ্য সরকার যেন কেন্দ্রের পাঠানো টাকা ফিরিয়ে দেয়। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এবং কর্মসূচীর জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করা ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রীয় এই প্রকল্প থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই বেরিয়ে আসে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী, দুটি প্রকল্প এক সঙ্গে থাকলেও প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি বাধ্যতামূলক থাকায় অসন্তোষ তৈরি হয়। তার জেরেই রাজ্য এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে।
আরও পড়ুন, সারদাকাণ্ডে এয়ারটেল-ভোডাফোনকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
এনডিএ সরকারের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পেরই একটি ভাগ পিএমজেএওয়াই। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটি চালু করে কেন্দ্র। প্রকল্প অনুযায়ী দেশের ১০.৭৪ কোটি দুঃস্থ পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমা পাবে। ৫০ কোটির কাছাকাছি মানুষ এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি মমতা সরকার কেন্দ্রকে জানিয়ে দেয় পিএমজেএওয়াই এর অংশীদার থাকবে না।
প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজ্যের অতিরিক্ত সচিব রাজিব সিনহা কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে লিখেছেন, "জন আরোগ্য যোজনার মউ স্বাক্ষরিত করার সময় কেন্দ্রকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব স্বাস্থ্য বিমা রয়েছে। সেই প্রকল্পের নাম (স্বাস্থ্যসাথী) অপরিবর্তিত রাখতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে প্রকল্পের নাম দেওয়া হল পিএমজেএওয়াই। এতে তৃণমূল স্তরের মানুষের মধ্যেও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল"।
তৃণমূলের ইস্তেহারেও কিন্তু স্বাস্থ্য বিমার উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু বিমার অংকের পরিমাণ সম্পর্কে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। ইস্তেহার প্রকাশের দিনই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার কম রোজগারের পরিবারকে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়া বার্ষিক ৬ লক্ষ টাকার কম রোজগারের প্রবীণ নাগরিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেব আমরা"।