Kedarnath Landslide: মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসে কেদারনাথের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিপর্যস্ত। হেলিকপ্টারে করে তীর্থ যাত্রীদের নামিয়ে আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে কেদারনাথে আটকে পড়েছেন এরাজ্যের বেশ কয়েকজন তীর্থযাত্রী। বাঁকুড়ার ইন্দাসের কুসমুড়ি গ্রামের যুবক শরৎচন্দ্র দে, স্ত্রী পিঙ্কি সরকার ও তাঁদের ৭ বছরের সন্তান নিয়ে সেখানে আটকে রয়েছেন। সঙ্গে বন্ধু অরিন্দম পালও আছেন। গত রবিবার থেকে তাঁরা কেদারনাথে আছেন। এখন টাকাপয়সাও প্রায় শেষের দিকে। শরৎচন্দ্র এদিন সকালে যোগাযোগ করেছেন নবান্নের সঙ্গে।
শরৎচন্দ্র দে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বিকেল চারটে নাগাদ মোবাইল ফোনে বলেন, "শুধু কথা বলার জন্য আজ সকাল থেকে কেদারনাথ মন্দির এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার নিচে নেমে দাঁড়িয়ে আছি। কেদারনাথের আশেপাশে ৪ কিলোমিটার মোবাইল ফোনের কোনও নেটওয়ার্ক নেই। সম্ভবত উত্তরাখণ্ড সরকার নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে। এত দূরে আসা ছাড়া মোবাইলে যোগাযোগ করার জন্য কোনও উপায় নেই। এখান থেকে চলে গেলে কোনও কথা বলা যাবে না। দ্রুত ফেরার আসাও কমবে। অন্যদিকে কেদারনাথে বিদ্যুৎ আসছে আর যাচ্ছে।"
গত কয়েক দিন ধরেই কোথাও ভূমিধস, কোথাও মেঘভাঙা বৃষ্টিতে জেরবার দেশের নানা স্থান। উত্তরাখণ্ডে আটকে পড়া বাঁকুড়ার এই পরিবারের কর্তা ৩১ বছরের শরৎচন্দ্র দে-র নেশা তীর্থস্থানে ভ্রমণ করা। এই যুবক ট্যুর-ট্রাভেলসের ব্যবসা করেন। বছরে মাঝে-মধ্যেই ঘুরে বেড়ান দেশের তীর্থস্থান ও ধামগুলিতে। তাঁরা গত রবিবার পৌঁছেছিলেন কেদারনাথে। আগামী মঙ্গলবার হরিদ্বার থেকে ট্রেন রয়েছে বাড়ি ফেরার। তাই সময় যত গড়াচ্ছে তত টেনশন বাড়ছে শরৎচন্দ্রের।
কী বললেন শরৎচন্দ্র দে?
শরৎচন্দ্র বলেন, "নবান্নে আজ সকালে ফোন করেছিলাম। ওরা উত্তরাখণ্ড সরকারকে জানিয়েছে বলে পরে ফোন করে জেনেছি। কিন্তু উত্তরাখণ্ড সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বাংলার তীর্থযাত্রীদের ফেরানোর জন্য। ওরা রাজস্থান, দিল্লি, পঞ্জাবের লোকেদের কপ্টারে নিয়ে গিয়েছে। হেলিকপ্টার ছাড়়া কোনও ভাবেই নিচে নামা সম্ভব নয়। কেউ কেউ পাহাড়-জঙ্গল দিয়ে নামতে চেষ্টা করছে, কিন্তু যেতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।"
শরৎচন্দ্র ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন বাঁকুড়ার এসডিপিও অফিসের সঙ্গেও। উত্তরাখণ্ড সরকার থাকা বা খাওয়ার যে ব্যবস্থা করেছে তা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে বাঁকুড়ার এই পর্যটকের। একটা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে কেদারনাথ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে হা পিত্যেশ করে দাঁড়িয়ে আছেন শরৎচন্দ্র। কখন ফোন আসবে, তাঁদের হেলিকপ্টারে করে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তা নাহলে ঘোর সঙ্কটে পড়বে পরিবার নিয়ে। একদিকে টাকাপয়সাও শেষ হয়ে যাবে। আবার মঙ্গলবারের ট্রেন মিস করলে ফের টিকিট কাটার পয়সাও সঙ্গে থাকবে না। শরৎচন্দ্র জানিয়েছেন, কেদারনাথে ৭০-৮০ জন এরাজ্যের তীর্থযাত্রী আটকে আছেন।