Lok Sabha Election 2024: ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল (TMC) BJP-র বিরুদ্ধে 'বহিরাগত' প্রচারে ঝড় তুলেছিল। এবার সেই তিরেই বিদ্ধ জোড়াফুলও। শুধু বিরোধীরা নয়, বাঙালি সংগঠনগুলোও এবার তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শানাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দলকে। মূলত রাজ্যের ৩ কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়েই ঝাঁঝালো আক্রমণ করছে বাঙালি সংগঠনগুলির নেতৃত্ব। বাঙালির জন্য পৃথক রাজনৈতিক দল গঠন করারও ডাক দেওয়া হয়েছে। বাঙালির উত্তরণ বহিরাগতদের দিয়ে সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তাঁরা।
বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে (Kirti Azad), বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী আরেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান (Yusuf Pathan) ও আসানসোলে তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha)। যাদের সঙ্গে বাংলা বা বাঙালির কোনও সম্পর্ক নেই তাঁদের প্রার্থী করায় বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। কীর্তি আজাদের বাবা ভাগবত ঝা আজাদ একসময় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সময়ে ভাগলপুরে অশান্তির জেরে বহু বাঙালিকে ভাগলপুর ছাড়তে হয়েছিল, এমন অভিযোগও তুলে ধরছে বাঙালি সংগঠনগুলি। তাঁর ছেলেকে বাংলায় তৃণমূল প্রার্থী করায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাংলা পক্ষ থেকে জাতীয় বাঙালি পরিষদ।
জাতীয় বাংলা পরিষদের সভাপতি ডাক্তার অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, '৭ কোটি বাঙালি যেখানে আছে সেখানে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না। বাইরে থেকে ভাড়া করে আমদানি করে আনতে হয়। বাংলার রাজনীতিতে দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে। বাঙালিয়ানা, বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে ব্রিগেডে বক্তব্য শোনা গেল অথচ র্যাম্পে হাঁটলেন ৩ জন অবাঙালি প্রার্থী। বাঙালির আবেগ নিয়ে আর কতকাল খেলা চলবে? বাঙালির নিজস্ব রাজনৈতিক দল প্রয়োজন। কোনও রাজনৈতিক দল বাঙালির উত্তরনের কথা ভাববে না। স্থানীয় দল বাঙালির আবেগ নিয়ে খেলা করছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কীর্তি আজাদের বাবা ভাগবত ঝা আজাদ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন অশান্তির জন্য বহু বাঙালি ভাগলপুর থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল।'
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee on CAA: ‘সিএএ-তে দরখাস্ত করলেই নাগরিকত্ব বাতিল, বাঙালি বিতারণের খেলা’, বোঝালেন মমতা
তৃণমূলের ওই তিন প্রার্থীকে নিয়ে বিরোধিতার পাশাপাশি তাঁদের ভোট না দিতেও আহ্বান জানিয়েছে বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষের সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, 'বাংলায় যোগ্য বাঙালি প্রার্থীর অভাব পড়েছে নাকি? তৃণমূল কংগ্রেস বাইরে থেকে ৩ জন প্রার্থীকে আমদানি করেছে। বাঙালি অধ্যুষিত কেন্দ্রে কীর্তি আজাদ, আসানসোল কেন্দ্রেও বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ, বহরমপুর যেখানে ৯৯ শতাংশ বাঙালি সেখানে গুজরাট (Gujrat) থেকে প্রার্থী আনা হয়েছে। আগে হয় তো বহরমপুরের নামটাও শোনেননি ইউসুফ। লজ্জার বিষয় যাঁরা অন্যদের বহিরাগত বলে তাঁরা বহিরাগত প্রার্থী দেয়। বাংলা পক্ষের দাবি, এই তিন বহিরাগতকে যেন একটা ভোটও কেউ না দেয়। CPIM বা কংগ্রেস যদি অসাম্প্রদায়িক বাঙালি প্রার্থী দেয় তাদের ভোট দিন। একজন মারোয়াড়ি ও একজন উর্দুভাষীও প্রার্থী হয়েছেন।'
মোট পাঁচজনকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা পক্ষ। বহিরাগতদের একটি ভোটও নয় বলে আবেদন জানিয়েছেন কৌশিক। একই সঙ্গে বাংলা ভাগের চেষ্টার অভিযোগ তুলে BJP-র বিরোধিতাও করছে তাঁরা।