'কলকাতার ভদ্রবাবুরা শান্তিনিকেতনে আসেন কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি আর মাটির বাড়ি দেখতে। কলকাতার পরিবর্তন হবে, বিশ্বের পরিবর্তন হবে আর শান্তিনিকেতনের কোনও পরিবর্তন হবে না!'- শান্তিনিকেতন সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার এক প্রশ্নের জবাবে এমন কটাক্ষই করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য ড. বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর তরফ থেকে হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা পেয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী। উপাচার্য বলেন, 'হেরিটেজ ঘোষণার পর এখন উৎসব চলছে। আগামী দিনে পরিকল্পনা নেওয়া হবে। এখনও আলোচনা করা হয়নি।'
কলকাতা থেকে অনেকেই সময় কাটাতে উইকেন্ডে শান্তিনিকেতনে যান। কেউ কেউ আবার শান্তিনিকেতনে দ্বিতীয় বাড়িও বানিয়ে ফেলেছেন। শান্তিনিকেতনও কি আগের চেয়ে বদলেছে? বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কথায়, 'কলকাতার ভদ্রবাবুরা এখন গাড়ি চড়ে তিন-চার ঘন্টায় শান্তিনিকেতন এসে যাচ্ছেন। আগে কত সময় লাগত? তাঁরা কি আশা করেন, কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি, বোঝাই করা কলসি হাঁড়ি, গাড়ি চালায় বংশীবদন, সঙ্গে যে যায় ভাগ্নে মদন। এই দৃশ্য দেখবেন! শান্তিনিকেতন একই থাকবে কিন্তু, কলকাতার পরিবর্তন হবে! এসব ডাবল স্টান্ডার্ড চিন্তাভাবনা। শান্তিনিকেতন পরিবর্তন থেকে বিরত থাকবে? গোটা পৃথিবী বদলাবে, ব্যতিক্রম শুধু শান্তিনিকেতন, এটা কী করে সম্ভব? ক্যাম্পাসে আমরা আগের মতোই পরিবেশ রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু পরিবর্তন মানুষের জীবনে স্বাভাবিক ঘটনা।'
হেরিটেজ প্রাপ্তির কৃতিত্ব নিয়ে বিতর্ক উঠলেও উপাচার্যের বক্তব্য, 'এই কৃতিত্ব সবার। কারও কুক্ষিগত নয়।' তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমাসে একলক্ষ পর্যটক আসেন মিউজিয়াম, শান্তিনিকেতন দেখতে। টুরিস্টদের জন্য গাইড, পর্যাপ্ত লাইট- নির্দিষ্টভাবে বেশ কিছু বিষয় বলে গিয়েছেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা। কীভাবে ম্যানেজ করবেন, পরবর্তী প্রশাসক সেটা ভাববেন। শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য মাথায় রেখে তাঁরা কাজ করবেন।
আরও পড়ুন- বিদেশ থেকে ফিরতেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের, উত্তর মমতারও, তুঙ্গে চর্চা
তাঁর কথায়, 'এই মুহূর্তে আমার কাছে কোনও ব্লুপ্রিন্ট নেই। আলোচনা করার সুযোগ পাইনি। এখন শুধু সেলিব্রেট করছি।' তবে হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পরও খোঁচা মারতে ছাড়েননি উপাচার্য। তাঁর কথায়, 'এক ব্যক্তি সাড়ে ৬ কাঠা জমি আটকে রেখেছেন, আরেকজন ৭ হাজার স্কোয়ার ফিট বাড়ি-সহ আড়াই বিঘে জমি বিশ্বভারতীকে দান করে গেলেন।'