/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/cats-2025-10-12-17-36-32.jpg)
বিহার নির্বাচনে ‘M ফ্যাক্টর'ই বড় ভরসা, বাজিমাত করবেন নীতীশ কুমার?
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এখন তুলনামূলক শান্ত হলেও বিহার তার ব্যতিক্রম। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে রাজ্যে দু’দফায় বিধানসভা নির্বাচন হবে — প্রথম দফা ৬ নভেম্বর ও দ্বিতীয় দফা ১১ নভেম্বর। শিশু দিবস ১৪ নভেম্বর ভোটগণনা। বিহার নির্বাচনের ফলাফল কেবল বিহারের রাজনীতি নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু ও কেরলে এবং পরের বছর উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট ও পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। বিহার নির্বাচনের প্রভাব সেই সকল রাজ্যেও পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিহার থেকে লোকসভায় ৪০ জন সাংসদ নির্বাচিত হন—এবং কেন্দ্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার লড়াইয়ে বিজেপির কাছে এই আসন সংখ্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, পহেলগাঁও হামলা এবং ‘অপারেশন সিনদুর’-এর পর পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির কারণে যে 'রাজনৈতিক ক্ষতি' হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছিল, বিহারের ভোট সেই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে কিনা সেটিও এখন নজরে।
এই নির্বাচনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ‘M ফ্যাক্টর’, অর্থাৎ মহিলা ভোটাররা। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনা’ (MMRY) ইতিমধ্যেই রাজনীতির মঞ্চে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রকল্পে প্রত্যেক যোগ্য পরিবারের এক মহিলাকে প্রাথমিকভাবে ১০,০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার জন্য। উদ্যোগ সফল হলে পরবর্তীতে আরও ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, ৭৫ লক্ষ মহিলার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা স্থানান্তর করেন।
নীতীশ কুমার এই উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারকেও টেক্কা দিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে এই ধরনের প্রকল্পই বিজেপির পুনর্গঠনের অন্যতম হাতিয়ার ছিল।বিহারে মহিলাদের ভোটের প্রভাব নতুন নয়। ২০১০ সাল থেকে তিন দফা বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের ভোটার উপস্থিতি পুরুষদের চেয়ে বেশি। ২০০৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নীতীশ কুমার মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য একাধিক প্রকল্প শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে সেই সকল প্রকল্পের সুফল তিনি ভোটের ফলাফলে পেয়েছেন।
নীতীশ সরকারের নতুন MMRY প্রকল্পকে অনেকেই ‘গেম চেঞ্জার’ বলছেন। ২০ বছরের শাসনে নানান অসন্তোষের মাঝেও মহিলা ভোটব্যাংক নীতীশের বড় ভরসা। রাজনীতির বিশ্লেষকদের মতে, “M ফ্যাক্টর”-ই হতে পারে এই নির্বাচনে এনডিএ জোটের জয়ের মূল চাবিকাঠি।
বিরোধী দল আরজেডি-র নেতা তেজস্বী যাদবও মহিলা ভোটব্যাঙ্ককে টার্গেট করে প্রতিটি দরিদ্র ও অনগ্রসর মহিলাকে প্রতি মাসে ২,৫০০ টাকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে মহিলাদের আস্থার দিক থেকে নীতীশ এখনও প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। যদি মহিলারা আবারও নীতীশকে সমর্থন করেন এবং এনডিএ সরকার গঠন করে, তাহলে ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনা’-র মতো প্রকল্প আগামী দিনে অন্যান্য রাজ্যেও চালু হতে পারে।