৪০ কিমি নয়, বরং ৯৫-১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টার গতিতে যাচ্ছিল আপ বিকানের এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনার একদিন পর চালকের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি। লোকো পাইলট এবং তাঁর সহকারী জানিয়েছেন, সমস্ত সিগন্যালই সবুজ ছিল। ট্রেনটি ঘণ্টায় ৮০ নয়, ৯৫ থেকে ১০০ কিমি স্পিডে চলছিল। আচমকা ঝাঁকুনি অনুভব করেন তাঁরা। তখন এমার্জেন্সি ব্রেক কষে ট্রেন থামান তাঁরা।
এদিন আরপিএফের ডিজি চালক এবং সহকারী চালককে ডেকে পাঠান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। রেলওয়ের কমিশনার অফ সেফটিও তাঁদের সঙ্গে এদিন কথা বলেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ইঞ্জিনের একটি ট্র্যাকশন মোটর ভেঙে গিয়েছিল। তাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ইঞ্জিনটি ছিল WAP 4 ক্যাটাগরির। এতে চারটি ট্র্যাকশন মোটর থাকে। যার একটি ভেঙে গিয়েছিল।
ট্র্যাকশন মোটরের কাজ কী?
এর কাজ হল ইঞ্জিনের চাকাকে রেললাইনে ধরে রাখা এবং চাকা ঘোরাতে সাহায্য করা। দুর্ঘটনার আগে একটি মোটর ভেঙে যায়। যার ফলে ইঞ্জিনের চাকা লাইনচ্যুত হয়। এরপর পর পর একের পর এক কামরা বেলাইন হয়ে যায়। ট্র্যাকশন মোটর ভেঙে যাওয়ার ফলেই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি অনুভব করেন চালক এবং সহকারী চালক। তখন তাঁরা এমার্জেন্সি ব্রেক কষেন। ট্রেনের গতি ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা থাকায় কামরাগুলি একটা আরেকটার ঘাড়ে উঠে যায়।
এদিকে, ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশে গোলোযোগের কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। শুক্রবার ময়নাগুড়ির দোমহনিতে এসে এমনই দাবি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের। এদিন সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেন রেলমন্ত্রী। তিনি কথা বলেন রেলের কর্তা ও দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের লোকো পাইলটের সঙ্গে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
আরও পড়ুন ট্রেনের ইঞ্জিনের ত্রুটিতেই ময়নাগুড়িতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, এমনই দাবি রেলমন্ত্রীর
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টা নাগাদ ময়নাগুড়ির কাছে দোমহনিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আপ বিকানের এক্সপ্রেস। লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের ১২ টি বগি। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯ যাত্রীর। আহত মোট ৩৬ জন যাত্রী। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন ১০ জন। দুর্ঘটনার পরপরই ভারতীয় রেলের তরফে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর জখম যাত্রীদের ১ লক্ষ ও অল্প আহত যাত্রীদের ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।