SSC Jobless Candidate Protest: যোগ্য চাকরি ফেরত চেয়ে চাকরিহারাদের 'দখলে' বিকাশ ভবন চত্ত্বর। মেন গেট ভেঙে বিকাশ ভবনে প্রবেশ চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের। যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে আজকের এই আন্দোলন।
চাকরিহারাদের একাংশের বিক্ষোভে ধুন্ধুমার রাজপথ। যোগ্যদের চাকরি ফেরানোর দাবিতে আজকের এই বিক্ষোভ। বিকাশ ভবন চত্ত্বরে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সঙ্গে চাকরিহারাদের তুমুল বচসা। মে মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। তবে কোন ভাবেই পরীক্ষায় বসতে রাজি নন যোগ্য চাকরিহারারা। এর মাঝেই ব্যক্তিগত কাজে এসে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তকে। তাঁকে ঘিরে ওঠে চোর চোর স্লোগান। সব্যসাচী বলেন, 'ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি...'! পাল্টা আন্দোলনকারীরা বলেন, 'আপনারাই ভগবান। আপনারা বললেই হবে'। আপনারাই তো সুপারনিউমারি পোস্ট তৈরি করেন'।
চাকরি হারাদের বিক্ষোভে উত্তাল বিকাশ ভবন। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। চাকরি হারা যোগ্য প্রার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিকাশ ভবনের তাঁরা মূল ফটক ভেঙে কার্যত বিকাশ ভবনের দখল নেন তারা। তাঁদের দাবি একটাই— যোগ্যদের চাকরি ফেরাতে হবে এবং অবিলম্বে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।চাকরিচ্যুতদের একাংশের এই বিক্ষোভে কার্যত থমকে যায় বিকাশ ভবনের স্বাভাবিক কাজকর্ম। মূল ফটকে ব্যাপক ভাঙচুর, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ও বচসায় উত্তেজনা চরমে ওঠে। চাকরিহারাদের তরফে দাবি করা হয়, 'মুখ্যমন্ত্রীর পাপের ফল আমরা কেন ভোগ করব? সুপ্রিম কোর্টের নামে পরীক্ষা। কোটি কোটি টাকা আবার তোলা হবে। আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। অযোগ্যদের টার্মিনেট করতে হবে। তালিকা প্রকাশ করতে হবে'।
আন্দোলনের প্রধান দাবি:
- যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে
- অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে
- নতুন করে পরীক্ষা নয়, পুরনো ভিত্তিতেই নিয়োগ সম্পূর্ণ করতে হবে
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, মে মাসের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাবে একেবারেই রাজি নন চাকরি হারা যোগ্য প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, ইতিমধ্যেই যাঁরা পরীক্ষায় সফল হয়েছেন, তাঁদের ফের পরীক্ষা নেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। বিকাশ ভবনের চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল পুলিশবাহিনী। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনওভাবেই আন্দোলন থেকে সরবেন না, যতক্ষণ না তাঁদের দাবি মানা হচ্ছে।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি হারানো প্রার্থীদের আন্দোলন আরও জোরদার হল। ৭ তারিখ থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন তাঁরা। অভিযোগ, কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই সরকার নতুন নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এমনকি, নোটিফিকেশনও প্রস্তুত করে ফেলা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
চাকরি হারানো এক প্রার্থীর কথায়, “আমরা চেয়েছিলাম সরকার আমাদের সঙ্গে বসে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুক। রিভিউ পিটিশন দায়েরের সময়ও আমাদের সঙ্গে কথা হয়নি। বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা হয়েছে। সাত বছর ধরে চাকরি করছি, কোনও অভিযোগ নেই আমাদের বিরুদ্ধে। দায় তো এসএসসি এবং রাজ্য সরকারের। সেই কারণে আমরা আর নতুন করে কোনও পরীক্ষা দিতে রাজি নই।”
চাকরি প্রার্থীদের দাবি, যাঁরা নন-টিচিং স্টাফ ছিলেন, এখনও অনেকে তাঁদের বকেয়া ভাতা পাননি। “যোগ্য-অযোগ্য সবাইকে এক করে দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের কারণে চাকরি গিয়েছে, তাঁদেরই চাকরি ফেরাতে হবে আমাদের। মুখ্যমন্ত্রীকেই এবার উদ্যোগ নিতে হবে, এবং আমাদের সম্মানের সঙ্গে স্কুলে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
চাকরি প্রার্থীদের আরও অভিযোগ, আন্দোলনের সময় তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এক আন্দোলনকারী জানান, “সব্যসাচী দত্তের নেতৃত্বে একদল গুণ্ডাবাহিনী আমাদের হেলমেট দিয়ে মারধর করেছে, রাস্তায় ফেলে লাথি মারা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই। আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।”
তাঁদের হুঁশিয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ না করলে এই আন্দোলন চলতে থাকবে। “নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে দেব না। আমরা সরকারকে বহুবার অ্যাপ্রোচ করেছি, কিন্তু কোনও পজিটিভ সাড়া আসেনি। যতক্ষণ না সুরাহা হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।”
চাকরি প্রার্থীদের একটাই দাবি— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি হস্তক্ষেপ। তাঁদের বিশ্বাস, একমাত্র তিনিই এই সমস্যা সমাধান করতে পারেন।