Indus Water Treaty Suspended: ভারতের 'অপারেশন সিন্দুর'-এর পর লাগাতার অ্যাকশনে ভারত। সামরিক ও কূটনৈতিক ভাবে পাকিস্তানকে কোনঠাসা করার চেষ্টা নয়া দিল্লির। এর মাঝেই ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছে। এই ইস্যুতে ফের একবার ভারতের কাছে আত্মসমর্পণে রাজি পাকিস্তান। কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পর ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে। এখন পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
ভারতের সামনে নতজানু পাকিস্তান ! প্রথমবারের মতো সিন্ধু জল চুক্তির শর্তাবলী নিয়ে আলোচনায় রাজি হল ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের তরফে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও ভারতের তরফে সাফ জানানো হয়েছে সন্ত্রাসবাদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন যতদিন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সরকারের অবস্থান স্পষ্ট: 'জল ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না'
মঙ্গলবার, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্টভাবে বলেন, "যতক্ষণ না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করবে ততক্ষণ ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখবে।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ও তার ভাষণে বলেছিলেন, “জল ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না”, যা ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা হবে একমাত্র সন্ত্রাসবাদ এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর বদলে গেল পরিস্থিতি
পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Waters Treaty - IWT) "তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত" রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ভারতের আপত্তির বিষয়ে সরাসরি আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানের জলসম্পদ সচিব সৈয়দ আলী মুর্তজা ভারতের সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। সূ
উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত ২০২৩ সালের জানুয়ারি এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি পর্যালোচনার দুটি আনুষ্ঠানিক নোটিশ পাঠালেও, সেসময় ইসলামাবাদ আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর দিল্লি যখন তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা করে, তখনই ইসলামাবাদ আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
২৪ এপ্রিল, পহেলগাঁও হামলার দুই দিন পর, ভারতের জলসম্পদ সচিব দেবশ্রী মুখার্জি চিঠিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন। তিনি আরও জানান, পাকিস্তান একাধিকবার ভারতের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। এই কারণেই ভারত সিন্ধু জল চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চুক্তি স্থগিতের পরে পাকিস্তানে জল সংকট
সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে পাকিস্তানে জল সরবরাহে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর জল প্রবাহে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে পাকিস্তান এখন কৃষি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে চরম সমস্যার মুখে পড়েছে।
জঙ্গি হামলার জবাবে অপারেশন সিন্দুর চালায় ভারত। এতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) ও পাকিস্তানে অবস্থিত একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও। তবে পরে ১০ মে সন্ধ্যা ৫টা থেকে উভয় দেশ সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে সম্মত হয়। সীমান্তে আপাতত শান্তি বিরাজ করছে, তবে কূটনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত।