লাভপুরে বিজেপি নেতার মেয়ের 'অপহরণের' ঘটনায় বিস্ফোরক দাবি করলেন অনুব্রত মণ্ডল। দলের বিধায়ক মণিরুল ইসলামও এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। এ প্রসঙ্গে অনুব্রতর সাফ জবাব, "দলের বিধায়ক বলে তো লাটসাহেব নয়। বিজেপিরা রটিয়েছিল, তৃণমূলের লোকেরা অপহরণ করেছে। তা হয়নি, বিজেপির লোকেরা ও মেয়ের বাবাই অপহরণ করিয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটি স্বীকার করেছে যে, মণি কাকু ও আমার বাবা যেতে বলেছে।
অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "অনুব্রতবাবুই তদন্ত করেছেন। ওঁর কথাই পুলিশ বলছে। আসল দোষীদের আড়াল করার জন্যই মেয়েটির বাবাকে দোষী সাজানো হয়েছে।" মণিরুল ইসলামের যোগসাজশ প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণবাবু আরও বলেছেন, "মণিরুল ইসলাম জড়িত, এটা হতেই পারে। দেখুন, ওঁদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। এক গোষ্ঠীকে বাঁচানোর জন্য আরেক গোষ্ঠীর নাম করছে। মণিরুল গোষ্ঠীকে শেষ করার জন্য ওঁর নাম করছেন উনি।"
আরও পড়ুন, প্রাণ বাঁচাতে থানায় তৃণমূল বিধায়ক, বিজেপি নেতার মেয়ের ‘অপহরণে’ অশান্ত লাভপুর
লাভপুরে বিজেপি নেতার মেয়ে প্রথমা বটব্যালের তথাকথিত অপহরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্বয়ং তাঁর বাবার। অপহরণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি নেতা সুপ্রভাত বটব্যালকে। গোটা ঘটনাটিই ‘সাজানো’ বলে দাবি পুলিশের। এ ঘটনা প্রসঙ্গে বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, "গোটা ঘটনাটিই সাজানো। পরিকল্পিত ভাবেই ওই নেতার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। ওঁর নামে একটা মামলা চলছিল। সেই মামলা থেকে নজর ঘোরাতেই অপহরণের নাটক করেছেন ওই বিজেপি নেতা।"
অন্যদিকে, বিজেপি নেতার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে, এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় লাভপুর এলাকায়। শেষমেশ ডালখোলা থেকে সুপ্রভাত বটব্যালের মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই তরুণী ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন। ডেবিট কার্ডের সূত্র ধরেই তাঁর খোঁজ পায় পুলিশ। 'অপহরণের' ঘটনায় সুপ্রভাতের পাশাপাশি আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, আমার বাড়ির ছাদে সভা করুক বিজেপি, আহ্বান অনুব্রতর
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হাতে বিজেপি নেতার মেয়ে অপহৃত হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় লাভপুরে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অশান্ত ছিল লাভপুর। বন্ধ থেকেছে লাভপুরের বাজারহাট, ব্যাহত হয় যান চলাচল।
শুক্রবার বিক্ষোভের আগুন ছড়াতে শুরু করে চারপাশে। একদিকে যেমন কীর্ণাহার অবরুদ্ধ হয়, তেমনই কালকাপুর পর্যন্ত পৌঁছে যায় বিক্ষোভের আঁচ। সপুত্র গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন লাভপুরের বিধায়ক মণিরুল ইসলাম। ইন্দাস হয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভকারী জনতার রোষের মুখে পড়ে যান তিনি। হঠাৎ বিক্ষুব্ধ জনতার টার্গেট হয়ে ওঠেন বিধায়ক। এই সময় বিধায়কের দেহরক্ষীরা কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন। এরপরই ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে আসে পুলিশ। সংঘর্ষস্থল থেকে বিধায়ককে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।