Birbhum News: বছর পাঁচেক আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু ভোটার তালিকায় গত লোকসভা পর্যন্তও ছিল জীবিত। ফলে ভোটের সময় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটও দিয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু জীবিত থেকেও ভোটাধিকার নেই স্বামীর। বঞ্চিত সরকারি সুবিধা থেকেও। সরকারি সুবিধা পাবেন কীভাবে! তিনি তো কাগজকলমে মৃত। মৃত মানুষ ভোট দিয়ে যেতে পারেন, তবে সরকারি সুবিধা কখনওই নয়!
এমনই অদ্ভুত ভুতুড়ে ভোটার তালিকার হদিশ মিলল বীরভূমের রামপুরহাট বিধানসভার নারায়ণপুর পঞ্চায়েত কানাইপুর সংসদে। ওই সংসদের হতদরিদ্র ধীরেন মাল জানতে পারেন তিনি মৃত। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘোরাফেরা করেও তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি। ফলে এখন ভিক্ষাকে জীবিকা করে কোনওরকমে মৃতপ্রায় হয়ে চলাফেরা করছেন। তবে বছর পাঁচেক আগে মৃত স্ত্রী ভাসানি মাল ভোটার তালিকায় ২০২৪ সাল পর্যন্তও ছিলেন জীবিত। ভোটের সময় আসেন, আর ভোট দিয়ে চলে যান।
মৃত স্ত্রীর নামে বার্ধক্য ভাতাও ঢুকছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু টাকা তোলা যাচ্ছে না। এদিকে ধীরেন মালকে মৃত ঘোষণা করায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পান না। চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটছে তাঁর। এই বয়সে বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। ভিক্ষাকে জীবিকা করে কোনওরকমে জীবন মরণের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ধীরেন মালের দাবি, প্রায় পাঁচ বছর আগে তাঁর ভোটার তালিকায় নাম বাদ দিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ভোটার কার্ড নিয়ে ভোট দিতে গেলে তাঁকে বুথ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ জানতে গেলে বলা হয়, তিনি মৃত। তাই তাঁর ভোটার তালিকায় নাম নেই। অথচ তাঁর স্ত্রী মৃত্যু হলেও তাঁর নাম ছিল ওই ভোটার তালিকায়। বার বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বলেও এখনও তাঁর নাম ভোটার তালিকায় ওঠেনি। ধীরেন মালের নাম যাতে ভোটার তালিকায় ওঠে তাঁর ব্যবস্থার নেওয়ায় আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন থেকে তৃণমূল দলীয় নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন পুলিশ দেখেই এলোপাথাড়ি গুলি পাচারকারীদের, নিমেষে এলাকা ঘিরে রুদ্ধশ্বাস 'অপারেশন'!
তৃণমূলের নারায়ণপুর অঞ্চল সভাপতি মিলন শেখ বলেন, “বিষয়টা আমরা জানি না। হয়তো স্ত্রী নাম বাদ দিতে গিয়ে স্বামীর নাম বাদ দিয়েছে। তবে তাঁর নাম যাতে ভোটার তালিকায় ওঠে তার ব্যবস্থা করব। একই সঙ্গে যাতে বার্ধক্য ভাতা পায় সেই বিষয়টাও দেখা হবে”।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল বলেন, “ভোটার তালিকায় গড়মিলের বিষয়টি আমরাই প্রথম অভিযোগ করেছি। মৃত মানুষের ভোটেই তো তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। তাছাড়া কানাইপুর সংসদ বিজেপি অধ্যুষিত। ফলে পরিকল্পিত ভাবে ধীরেনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে”।