Advertisment

উপপ্রধান খুনের বদলা নিতেই বাড়িতে আগুন! পুড়ে মৃতদের মধ্যে মহিলা-শিশু, ঘটনাস্থলে বীরভূমের পুলিশ সুপার

নিহত তৃণমূল নেতা বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
TMC leader's murder sparks tension as village houses set ablaze, atleast 10 dead

অগ্নিকাণ্ডের জেরে গ্রামে পরিদর্শনে আসেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী। ছবি-আশিস মণ্ডল

ফের খুন হলেন এক তৃণমূল নেতা। তাকে জনবহুল এলাকায় বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল নেতা বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। নাম ভাদু শেখ (৩৮)। সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বগটুই মোড়ে দাঁড়িয়ে ফোন করছিলেন তিনি। সে সময় দুটি মোটর বাইকে চার দুষ্কৃতী তাকে লক্ষ্য করে পর পর কয়েকটি বোমা ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে উপপ্রধানের মৃত্যুর আক্রোশে বগটুই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisment

জনবহুল এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে অন্যান্যরা ছুটে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে উপপ্রধানকে উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই বগটুই গ্রাম জুড়ে শুরু হয় বোমাবাজি। বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করে বোমাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন। তিনি বলেন, "আমাদের নেতা ভাদু শেখ রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ফোন করছিল। সে সময় দুষ্কৃতীরা বোমা মেরে খুন করেছে। আমরা পুলিশকে বলেছি দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করতে হবে। ভাদু উপপ্রধান হওয়ার পর এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতী শান্তিকে বিঘ্নিত করতেই এসব করছে। বছরখানেক আগে ওর দাদাকে খুন করা হয়েছে। এখনো সব অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। আমরা পুলিশকে বলেছি এলাকায় শান্তি রাখতে হবে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ থাকতে পারে। সেটাও খুঁজে বের করা হবে"।

আরও পড়ুন তৃণমূল নেতা খুনের জেরে উত্তপ্ত রামপুরহাট, বহু বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত অন্তত ৭ জন

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, নিহত ভাদুর ছায়াসঙ্গী লালন শেখ বলেন, "দাদা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ফোন করছিল। আমি ছিলাম কিছুটা দূরে। দেখলাম দুটো মোটরবাইকে চার জন বাইক থেকে নেমে দাদাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করল। এরপর বোমা মারে। আমি কাছে যেতেই আমাকে লক্ষ্য করে একটি বোমা ছোড়ে। আমি কোনো ক্রমে ছুটে পালিয়ে বাঁচি। ওদের কাউকে চিনতে পারিনি। তবে সকলেই কম বয়সের ছেলে। ওরা জাতীয় সড়ক ধরে নলহাটির দিকে পালিয়ে যায়"।

তৃণমূল নেতা খুনে দুষ্কৃতীদের ধরতে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে দুটি সিসিটিভি রয়েছে। একটি রামপুরহাট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, তৃণমূল কাউন্সিলর অশ্বিনী তিওয়ারির বাড়িতে অন্যটি রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের। দুটি সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনাস্থল ইঁট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। অন্য দিকে উপ প্রধানের মৃত্যুর আক্রোশে বগটুই গ্রামের পাঁচটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ফটিক শেখ ও ছোট লালন শেখের পরিবারের সদস্যদের পুড়ে মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দশজন মহিলা ও দুজন শিশু। ফটিক এবং ছোট লালন উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের অভিযুক্ত বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের জেরে গ্রামে পরিদর্শনে আসেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী। অগ্নিদগ্ধ বাড়িগুলি খতিয়ে দেখে পুলিশ।

tmc Birbhum Dist police
Advertisment