গোয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইউটিউবার রোদ্দুর রায়কে। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অশ্লীল শব্দ প্রয়োগের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। এরপরই শোসাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ছুড়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেকের সম্মান কী রবীন্দ্রনাথ সহ অন্যান্য মনীষীদের থেকেও উপরে? জানতে চেয়েছেন পদ্ম শিবিরের এই নেতা।
অনুপম হাজরা নিজের টুইটারে লিখেছেন, 'কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য মনীষীদের নিয়ে যখন অশ্রাব্য গালিগালাজ ও কুমন্তব্য করেছিলেন তখন রোদ্দুর রায়কে গ্রেফতার করার প্রয়োজন বোধ করেনিথা স্পষ্ট ভাষায় বলতেই, চিরুনী তল্লাশি করে গোয়া থেকে গ্রেফতার রোদ্দুর রায় অর্থাৎ বাঙালি মনীষী বা মহাপুরুষ বা বাঙালি সেন্টিমেন্ট চুলোয় যাক, মোদ্দা কথা হলো, এই দুজন ব্যক্তির স্থান সবার উপরে!!!'
এরপরই মোক্ষম প্রশ্নবাণ ছুড়েছেন অনুপম। টুইটারে লিখেছেন, 'সংক্ষেপে আমার প্রশ্নটা খুব পরিষ্কার, বাক সংযম হীন রোদ্দুর রায়ের গ্রেপ্তারিটা তখন প্রয়োজন বোধ হয়নি যখন তিনি রবীন্দ্রনাথ বা অন্যান্য মনীষীদের নিয়ে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করেছিলেন বা করে থাকেন কিন্তু আপনাকে বা আপনার ভাইপোর দিকে আঙ্গুল তুলতেই সেই গ্রেফতার!!!'
উল্লেখ্য, আগেই রবীন্দ্রসঙ্গীতকে বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে ইউটিউবার রোদ্দুরের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের বসন্ত উৎসবে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটেছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের কথার সঙ্গে অশ্লীল শব্দ পিঠে লিখে বসন্ত উৎসবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল কয়েকজনকে। যা ঘিরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রোদ্দুরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। তখন এই জনপ্রিয় ইউটিউবারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি লালবাজার।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য, গোয়া থেকে গ্রেফতার রোদ্দুর রায়
এরপর মুখ্যমন্ত্রীর একাডেমি সম্মান প্রাপ্তি ও কেকে-র মৃত্যু ঘিরে সোশাল মিডিয়ায় মুখ কোলেন রোদ্দুর। অভিযোগ, সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেন তিনি। আগেই পাটুলি ও লালবাজরের সাইবার ক্রাইম সাখান অভিযোগ দায়ের হয়েছিল রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতার চিৎপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন ঋজু দত্ত নামের এক তৃণমূল নেতা। জানা গিয়েছে সাংসদ শান্তুনু সেনও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। এছাড়াও একই অভিযোগে অসংখ্যা অভিযোগ কলকাতার বিভিন্ন থানায় জমা হয়। এরপরই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
কিন্তু, অনুপম হাজরার প্রশ্ন, মমতা, অভিষেককের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করতেই গ্রেফতার করা হল রোদ্দুরকে, অথচ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অন্যান্য মনীষীদেরও একইভাবে অসম্মান করেন তিনি। তাহলে অভিযোগ সত্ত্বেও কেন আগে এই ইউটিউবারকে গ্রেফতার করা হল না?