সামগ্রিকভাবে দেশে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত, মূলত এ দাবি নিয়েই বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। এি বিদ্বজ্জনদের মধ্যে অন্যতম অভিনেতা-নাট্যকার কৌশিক সেন। সম্প্রতি কৌশিক জানান, এ চিঠি লেখার পরই তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কৌশিক সেন নিজের দর বাড়ানোর জন্য এসব করছেন। নাটকের লোক নাটক করছেন। কে মারতে যাবে? এসব লোকজনদের মেরে কে নিজের হাত ময়লা করবে!’’। সায়ন্তনের এই মন্তব্যে সরব হয়েছেন ৪৯ জন বিশিষ্টদের একাংশ।
আরও পড়ুন: বিরোধী বুদ্ধিজীবীদের দুষে মোদীকে ফের চিঠি বিশিষ্টদের
বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর মন্তব্যের প্রসঙ্গে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না। এত তুচ্ছ কথায় মাথা ঘামোর দরকার আছে বলে মনে করি নায অনেক উল্টোপাল্টা কথাই তো বলেন ওঁরা’’। কৌশিক সেন-পুত্র তথা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন বলেন, ‘‘সবসময় রাজনীতি করার জন্যই এসব বলে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর আগে মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি পাঠানো হয়েছিল। বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে। জানি না কেন সেটাকে মানুষ দেখতে চেয়েও দেখতে চাইছে না। গণতান্ত্রিক দশে যে কোনও মানুষ প্রশ্ন করতেই পারেন। এতটা সিরিয়াস হওয়ার তো কিছু নেই। কয়েকটা প্রশ্ন করা হয়েছে মাত্র। একটা চিঠি পেয়ে এতটা ভয় পাওয়ার তো কিছু নেই। কয়েকটা প্রশ্ন দেখে যদি কেউ এরকম করতে থাকেন, তাতে তাঁদের ভীতিটাই প্রকাশ পায়’’। সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায় বলেন, ‘‘কৌশিক সেনকে পুরোপুরি বিশ্বাস করি। মনে হয় না, এটা নিয়ে কোনও মিথ্যাচার করতে পারেন। বাকিদের মন্তব্য দেখে অবাক লাগছে। কোনও নাগরিকের সুরক্ষার অসুবিধে হয়ে থাকলে, সব দলের এগিয়ে এসে সুরক্ষা দেওয়া উচিত। সিরিয়াসলি নেওয়া উচিত। এ দেশে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে’’।
আরও পড়ুন: মোদীকে চিঠি দিলেন অপর্ণা-অঞ্জন সহ বিদ্বজ্জনেরা
উল্লেখ্য, ক’দিন আগেই জয় শ্রীরাম, গণপিটুনি, অসহিষ্ণুতা, ধর্মীয় মেরুকরণের মতো বিষয়গুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে অদূর গোপালকৃষ্ণণ, অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত, কেতন মেহতা, অনুরাগ কশ্যপ, গৌতম ঘোষ, শ্যাম বেনেগাল, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টরা চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সেই চিঠির পরই শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা খোলা চিঠি দেন আরও ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে ৪৯ জন বিশিষ্টদের পাঠানো চিঠি দেখে বিস্মিত হয়েছি। বিশেষ কিছু বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরব হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ওই চিঠি পাঠিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন’’।