রাজনীতির ময়দানে বিপক্ষ দলের হলেও কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মুখর হলেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, 'সম্প্রতি মমতা সরকারের দুর্নীতি, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে কয়েকজন যুবক সোচ্চার হয়েছেন তাঁদের মধ্যে কৌস্তভ অন্যতম। তাঁর দ্রুত মুক্তির দাবি করি। পুলিশ যে কায়দায় রাত তিনটের সময় ওঁর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়েছে তার প্রতিবাদ করছি। আমরা সোচ্চার হবো।'
কী বলেছেন শুভেন্দু?
এদিন প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা অতীতে মমতার প্রতি কংগ্রেসের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন । বলেছেন, 'নন্দীগ্রামের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে আমাকে জয়ী করিয়েছিলেন। কমপার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এরপর ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন এমএলএ হওয়ার জন্য, মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ বাঁচানোর জন্য। তখন এই প্রদেশ কংগ্রেস প্রকাশ্যে প্রার্থী না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন ঘোষণা করেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক সঠিক সময়ে কংগ্রেসকে তার প্রতিদান দিচ্ছেন। এবং আমি আশা করব, যেভাবে কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় নেতা কপিল সিব্বল বা মনু সিঙ্ঘভি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করছেন প্রতিদিন, ঠিক একইভাবে কৌস্তভ বাগচীকে, তাঁদেরই সহকর্মী, কপিল সিব্বল বা মনু সিংভি-র সহকর্মী, তাঁকেও সাহায্য করবেন, কৌস্তভ দ্রুত জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি।'
আরও পড়ুন- কুণালের U টার্ন? রাখঢাক সরিয়ে কৌস্তভ গ্রেফতারিতে খুল্লমখুল্লা পুলিশকে ধুলেন কুণাল
তরুণ আইনজীবীকে এদিন 'ভাতৃপ্রতীম', 'লড়াকু' ও 'উজ্জবলভবিষ্যতময়' বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সাফ দাবি, 'রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসাবে রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে না থেকে আমরা যেভাবে আনিশ খান, বগটুই ও ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর হত্যার ইশ্যুতে সরব হয়েছিলাম, এক্ষেত্রেও আমরা সোচ্চার হবো।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী অধীর কন্যার আত্মহত্যা এবং তাঁর গাড়িচালকের মৃত্যু নিয়ে তিনি ‘অনেক কথা’ জানেন। তিনি ‘মুখ খুললে’ বিপদ হবে। তার জেরেই শুক্রবার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। সেখানে তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন আমলা দীপক ঘোষের একটি বইয়ের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ব্যক্তি আক্রমণ’ করেন বলে অভিযোগ। এরপরই শুক্রবার গভীর রাতে কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে বড়তলা থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে।