বোমা ফাটালেন দিলীপ ঘোষ। 'গত কয়েক বছরে বাংলায় সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং করা হয়েছিল'। বিস্ফোরক অভিযোগে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। খোদ কেন্দ্রের শাসকদলের সাংসদ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকা সংস্থার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বঙ্গ রাজনীতির হাওয়া আরও গরম করে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।
এদিন ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ? রবিবার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি বলেন, ''গত কয়েক বছর ধরে বাংলায় সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং করা হয়েছিল। অর্থমন্ত্রক বুঝতে পেরে ইডিকে পাঠিয়েছে। যাঁরা সেটিং করেছেন তাঁরা এখন বলছেন ইডি কেন? কারণ, এই কুকুরটা পোষ মানবে না, কামড়াবে। তবে অসুখ অনুযায়ী ওষুধ কম হয়ে যাচ্ছে।''
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে সারদা, নারদা, রোজভ্যালি-সহ একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদলের বেস কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীর। এমনকী দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতারও হতে হয়েছে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতাকে। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন পেয়ে তাঁরা বাইরে রয়েছেন। সিবিআইয়ের সঙ্গে 'সেটিং' অভিযোগ এরাজ্যে নতুন নয়। বারবার বঙ্গে সিবিআই তদন্ত মাঝপথে থমকে যাওয়ায় 'দিদি-মোদী সেটিং' তত্ত্বে শান দিয়েছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন- ‘পুরাতনই ভিত্তি, নতুনই ভবিষ্যৎ’, কলকাতায় মমতা-অভিষেকের ছবি দেওয়া নয়া ফ্লেক্স
এরাজ্যে বিশেষ করে বাম-কংগ্রেসের তরফেই বারবার মোদী-মমতা 'সেটিং' অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে। অতি সম্প্রতি এরাজ্যে ইডি এসএসসি দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পরেই দিল্লি উড়ে যান তৃণমল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের মোদীর সঙ্গে একান্তে তাঁর বৈঠক হয়। সেই বৈঠক নিয়ে বাম-কংগ্রেস 'সেটিং' তত্ত্বে সুর আরও চড়া করে। যা নিয়ে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের বিড়ম্বনাও বেশ বাড়ে। তবে মুখে দিল্লিতে 'সেটিং' তত্ত্ব বারবার অস্বীকার করে গিয়েছেন এরাজ্যের বিজেপি নেতারা।
এবার অবশ্য কোনও রাখঢাক না রেখেই বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি কয়েক গুণে বাড়িয়ে দিলেন খোদ দলেরই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। গত কয়েক বছর ধরে নানা তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের সঙ্গে বাংলায় 'সেটিং' করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। যদিও দিলীপ ঘোষের এই দাবি নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া মিলেছে তৃণমূলের তরফেও। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আবার দিলীপের মন্তব্যে অন্য 'গন্ধ'ও খুঁজে পেয়েছেন। দিলীপ-শুভেন্দু ঠাণ্ডা লড়াই তত্ত্ব খাড়া করেছেন কুণাল।
আরও পড়ুন- পোষ্টার ইস্যুতে জোড়া-ফুলে তাল ঠোকাঠুকি, শুভেন্দুর হুঁশিয়ারিতে অন্য সমীকরণ
কুণাল ঘোষ এদিন একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ''এটা কি শুভেন্দুকে অ্যারেস্ট করানোর কৌশলী বিবিৃতি? সিবিআই ও ইডি দু'টিই কেন্দ্রীয় সরকারের। উনি কি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন? উনি কি অমিত শাহকে গিয়ে বলেছেন? দিলীপ ঘোষের কথায় সিবিআইয়ের সম্মানহানি হচ্ছে। মানসিক হতাশা থেকে বলছেন। শুভেন্দুকে যাতে অবিলম্বে সিবিআই ধরে। শুভেন্দুর সঙ্গে সিবিআইয়ের সেটিং, সেটাই ঘুরিয়ে সামনে এনে দিলেন দিলীপ ঘোষ।''