Advertisment

বদলার সাত, দেড় বছরে বঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে বিজেপি-তৃণমূল

কী এমন হয়েছে এই সময়ে?

author-image
Joyprakash Das
New Update
BJP TMC is using central and state agencies against each other , কেন্দ্র ও রাজ্য এজেন্সিকে একে অপরের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি তৃণমূল 696267

নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর ক্রমাগত কমেছে বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা। প্রথম পর্যায়ে দুই সাংসদের বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে পদত্যাগ করা। দিনহাটায় নিশীথ প্রামানিক ও শান্তিপুরে জগন্নাথ সরকার পদত্যাগ করায় উপনির্বাচন হয়। জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এর মধ্যবরতী সময়ে সাত-সাতজন বিজেপি বিধাযক তৃণমূলে যোগ দেয়। এই সময়কালেই ইডি-সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয় মমতা মন্ত্রিসভার দুই প্রবীণ সদস্যসহ আরও দুই তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ আরও তিন তৃণমূল নেতা জেলবন্দি রয়েছে।

Advertisment

গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি জয় পায় ৭৭টি আসনে। দিনহাটায় নিশীথ প্রামানিক ও শান্তিপুরে জগন্নাথ সরকার পদত্যাগ করায় উপনির্বাচন হয়। জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। কমতে শুরু করে পদ্মশিবিরের বিধায়ক সংখ্যা। প্রথমেই বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সহসভাপতি তথা কৃষ্ণনগরের দলীয় বিধায়ক মুকুল রায় যোগ দেন তৃণমূলে। এরপর পদ্মশিবির ছেড়ে একে একে তৃণমূলে যোগ দেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রথম পাঁচ বিধায়কই একসময়ে ঘাসফুল শিবিরেই ছিলেন। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালও তৃণমূলে যোগ দেয়। এর আগে সাংবাদিকতা করতেন সুমন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের ঘনিষ্ঠ কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহার সম্প্রতি তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। সেই হিসেবে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা এখন ৬৭।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর পার হতে না হতেই শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি, গরুপাচার নিয়ে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তৃণমূল কংগ্রেস ইডি ও সিবিআইয়ের এই তদন্তে বিজেপির রাজনৈতিক অভিসন্ধি চরিতার্থ ছাড়া অন্য কিছু দেখছে না। ইডি ও সিবিআই এই পর্যায়ে চারজন তৃণমূল বিধায়কসহ আরও তিন তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে। এই ৭ জন এখনও জেলবন্দি রয়েছেন। তার মধ্যে দোর্দদণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ভিনরাজ্যের জেলে দিনাতিপাত করছেন।

আরও পড়ুন- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: বড় ঘোষণা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, বেকায়দায় চাকরিপ্রার্থীরা

একঝলকে দেখা নেওয়া যাক গত দেড় বছরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বকে গ্রেফতারের ইতিবৃত্ত। ২০২২-এ দিনভর তল্লাশির পর ২৩ জুলাই গভীর রাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। তারপর গরু পাচার মামলায় ২০২২-এর ১১ অগাস্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ওই বছরের ১১ অক্টোবর নদিয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। ওই একি মামলায় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে ইডি গ্রেফতার করে। তিন মাসের মধ্যে ১০ মার্চ হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। তারপর ১৭ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞাঁর তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় বনমন্ত্রী তথা হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

সল্টলেকের বাড়িতে ইডির তল্লাশির সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যসয় ঘোষণা করেছিলেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মৃত্যু হলে বিজেপি ও ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। ওর শরীর ভাল না। রাজনৈতিক মহলের মতে, ইডি বা সিবিআইয়ের তল্লাশি বা অভিযান মানেই বিজেপির নির্দেশ বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে য়খন সাত-সাত জন বিজেপি বিধায়ক এখন জোড়াফুলের পতাকাতলে, ঠিক তখনই জেলবন্দি তৃণমূলের বিধায়ক সহ সাত নেতৃত্ব। তবে এর মধ্যে দায়িত্বে বহাল রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিধায়ক রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য ও জীবনকৃষ্ণ সাহা। বাকিদের বহিস্কার করেছিল দল। জেলবন্দি ও দলবদলের খেলা চলছে, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

abhishek banerjee Suvendu Adhikari modi amit shah bjp tmc Mamata Banerjee
Advertisment