২০১৮-এ পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবু যেন শেষরক্ষা হল না। মনোনয়নের শেষ লগ্নে ফের কৌশল বদলাতে হল বঙ্গ বিজেপিকে। শেষমেশ নির্বাচন কমিশনে হাজির মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ বিজেপি প্রার্থীরা।
গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনে এবার ব্লকে ব্লকে প্রার্থীদের নিয়ে ঢু মেরেছেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সাংসদ থেকে বিধায়ক, সাংগঠনিক নেতা-নেত্রীরাও গিয়েছেন রাজ্যের নানা ব্লকে। সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, সৌমিত্র খাঁ, এই তালিকা বেশ দীর্ঘ। মনোনয়নের ধারার বদল ঘটেছে তবুও প্রার্থী দিতে এখনও সর্বত্র সফল হয়নি বিজেপি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আর মাত্র এক দিন বাকি রয়েছে। পাশাপাশি একেবারে নিম্নস্তরে এক জোট হয়ে মিছিল করে বিরোধীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন সেই দৃশ্যও দেখেছে বাংলার মানুষ।
নন্দীগ্রামে দলের প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার বসিরহাটে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি বেশ কয়েকটি ব্লকে গিয়েছেন গতকাল, মঙ্গলবার। এভাবে বিভিন্ন ব্লকে মনোনয়নের দায়িত্ব বর্তেছিল বিজেপির নেতৃত্বের ওপর। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ইন্দাস গিয়েছিলেন। বুধবার সৌমিত্র তো পুলিশের বিরুদ্ধে বিধায়ককে খুনের পরিকল্পনার অভিযোগ এনেছেন। ক্য়ানিং গিয়েছিলেন সজল পাল ও প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। এভাবে দলীয় কর্মসূচি চলছে পাঁচ দিন ধরে। তবুও ক্যানিং, ইন্দাস, বসিরহাটসহ নানা জায়গায় বিজেপি প্রার্থীরা পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। কলকাতায় নির্বাচন কমিশনে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্ব বিজেপি প্রার্থীরা হাজির হয়েছেন মনোনয়ন জমা দিতে। বিরোধীদের কোথাও অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোথাও বা পুলিশের বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, শীর্ষ নেতৃত্ব পাশে থাকলে স্থানীয় প্রার্থীদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে। এই কারণেই মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় এমন রণকৌশল নিয়েছে বিজেপি। সর্বত্র সফল না হলেও ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। যখন বিজেপি এই নয়া কৌশলে মনোনয়ন জমা দিচ্ছে তখন কিছু জায়গায় বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির স্থানীয়রা এক যোগে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছেন।
মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে বিরোধীদের। এরপর রয়েছে নির্বাচন, তারপর গণনা, ফল ঘোষণা। রাজনৈতিক মহলের মতে, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া থেকে শুরু হওয়া খেলা কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটাও বড় বিষয়। কিভাবে প্রতিটি ধাপে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিরোধীরা টেক্কা দেবে সেটাই সব থেকে বড় চ্য়ালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।