New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/09/fpLTErBJG3Fhx7fDlnDs.jpg)
একের পর এক বিস্ফোরণ, এত মৃত্যুতেও ফেরেনি হুঁশ! প্রাণ হাতে পেটের তাগিদে আতশবাজি তৈরির রমরমা Photograph: (ফাইল ছবি)
Fire Cracker in Champahati : বাড়ির বারান্দায় বসে শব্দবাজিতে সলতে পরাচ্ছিলেন বছর তিরিশের গৃহবধূ। আশেপাশে বসে আরও কয়েকজন। কেউ বাজিতে দড়ি জড়াচ্ছেন, কেউ রঙিন কাগজ লাগাচ্ছেন। বাড়ির আর পাঁচটা কাজের মতই সকলে মিলে হাতে হাতে তৈরি করে চলেছে আতশবাজি।
একের পর এক বিস্ফোরণ, এত মৃত্যুতেও ফেরেনি হুঁশ! প্রাণ হাতে পেটের তাগিদে আতশবাজি তৈরির রমরমা Photograph: (ফাইল ছবি)
Fire Cracker in Champahati : বাড়ির বারান্দায় বসে শব্দবাজিতে সলতে পরাচ্ছিলেন বছর তিরিশের গৃহবধূ। আশেপাশে বসে আরও কয়েকজন। কেউ বাজিতে দড়ি জড়াচ্ছেন, কেউ রঙিন কাগজ লাগাচ্ছেন। বাড়ির আর পাঁচটা কাজের মতই সকলে মিলে হাতে হাতে তৈরি করে চলেছে আতশবাজি। চারদিকে এত দুর্ঘটনার খবরে ভয় করে না? উত্তরে এক গৃহবধূ জানান, এ তো সামান্য চকলেট। এতে কিছু হবে না।
গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাজি বিস্ফোরণে একাধিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার কল্যাণীতে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। চম্পাহাটির হারালেই মাস দেড়েক আগে বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যু হয়। তার পরেও বারুইপুরের এই গ্রামে বেআইনি বাজি তৈরির রমরমা কমেনি। শনিবার এলাকা ঘুরে একাধিক জায়গায় কার্যত প্রকাশ্যেই বাজি তৈরি চোখে পড়েছে। লুকিয়ে চুরিয়ে যে বহু জায়গাতেই বাজি তৈরি চলছে, তার প্রমাণও মিলেছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর হারালে পিন্টু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে উড়ে যায় বাড়ির একাংশ। অভিযোগ, ওই বাড়িতে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি হচ্ছিল। গ্রামের বেশ কিছু মহিলা সেখানে কাজ করছিলেন। অনেকেই জখম হন। সেদিনই একজনের মৃত্যু হয়। পরে আরও একজন মারা যান। সেই বাড়ি তথা কারখানা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। এ দিন ওই বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরেই বারান্দায় বসে শব্দবাজি তৈরির ছবি চোখে পড়ে।
কিছুটা দূরে দেখা যায়, বড় জায়গা জুড়ে শুকোতে দেওয়া হয়েছে বাজির মশলা। সেই মশলা যে শব্দবাজিরই, তা জানান আশেপাশের লোকজনই। গ্রামে একাধিক জায়গায় আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় বারুদ। ওই এলাকাতেই বাড়ি বিস্ফোরণে মৃত শঙ্করী সর্দারের। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় দুই বোমা, নাতি-নাতনিরা রয়েছেন। বৌমা লক্ষ্মী সর্দার বলেন, “গ্রামে অনেক বাড়িতেই বাজি তৈরি হয়। গ্রামের মেয়ে-বউরাই কাজ করে। শাশুড়িও তেমনই করতেন। জানি না প্রশাসন কী ভাবছে, তবে যে কাজে এত ঝুঁকি, মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে, সেই কাজ তো না করাই ভাল।”
বাজির জন্য বিখ্যাত চম্পাহাটির হারাল। ছ’শোর কাছাকাছি স্থায়ী দোকান রয়েছে এলাকায়। উৎসবের মরসুমে আরও আস্থায়ী দোকান বসে। এলাকায় বিস্ফোরণের পর পুলিশের নির্দেশে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে সব দোকান। তবে অভিযোগ, চোরা-গোপ্তা ব্যবসা চলছেই। শব্দবাজি তৈরিতেও রাশ টানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, হারালে প্রায় ঘরে-ঘরে বাজি তৈরি হয়। অনেকেরই বাজি তৈরির শংসাপত্র নেই। এ ভাবে বাজি তৈরি করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। প্রশাসনের তরফে বাজি ক্লাস্টার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বাজি তৈরি ও বিক্রির গোটা ব্যবস্থাটাই গ্রাম থেকে সরিয়ে ফাঁকা জায়গায় তৈরি ক্লাস্টারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেই কাজ খুব বেশি এগোয়নি। হারাল বাজি ব্যবসায়ী সমিতির তরফে অলোক মণ্ডল বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশে এলাকায় কোথাও বাজি তৈরি বা বিক্রি হচ্ছে না। লুকিয়ে চুরিয়ে কেউ কোথাও কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, হারালে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।