Premium: বই পাড়ায় দুশ্চিন্তার কালো মেঘ! ঘুম কেড়েছে উচ্ছেদ-আতঙ্ক!
College Street-Boi Para: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বুলডোজার চালিয়ে সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করার প্রয়াস নিয়েছে। এরই পাশাপাশি ফুটপাথ দখলমুক্ত করতেও উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। ফুটপাতে একজনের একাধিক ডালা নয়, সাধারণ মানুষের হাঁটার জায়গা, প্লাস্টিকের ছাউনি নয়, নানা নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। আপাতত পরিকল্পনার জন্য উচ্ছেদে বন্ধের একমাসের সময়কাল চলছে। কিন্তু এরপর কী হবে?
College Street-Boi Para: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বুলডোজার চালিয়ে সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করার প্রয়াস নিয়েছে। এরই পাশাপাশি ফুটপাথ দখলমুক্ত করতেও উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। ফুটপাতে একজনের একাধিক ডালা নয়, সাধারণ মানুষের হাঁটার জায়গা, প্লাস্টিকের ছাউনি নয়, নানা নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। আপাতত পরিকল্পনার জন্য উচ্ছেদে বন্ধের একমাসের সময়কাল চলছে। কিন্তু এরপর কী হবে?
College Street-Boi Para: কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের 'বই পাড়া'। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।
College Street: অনলাইন, পিডিএফ, জেরক্স-এর দাপটে বই পাড়ার ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এবার উচ্ছেদ ভাবনায় নয়া আতঙ্ক কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতের বইয়ের দোকানিদের। অপারেশন সানসাইনে রক্ষা পেয়েছিল, এখন সার্ভে চলছে ফুটপাতের দোকান নিয়ে। হাঁটার রাস্তা ছেড়ে বাকি নিয়ম মানলে কোনও অসুবিধা হবে না বলে মনে করছে বই পাড়া। বামফ্রন্ট আমলে অপারেশন সানসাইনে কলকাতার ফুটপাথে অভিযান চলেছিল। উত্তাল হয়েছিল মহানগর। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বুলডোজার চালিয়ে সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করার প্রয়াস নিয়েছে। পাশাপাশি ফুটপাথ দখলমুক্ত করতেও উদ্যোগ নিয়েছে। ফুটপাতে একজনের একাধিক ডালা নয়, সাধারণ মানুষের হাঁটার জায়গা, প্লাস্টিকের ছাউনি নয়, নানা নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। আপাতত পরিকল্পনার জন্য উচ্ছেদ বন্ধ রয়েছে একমাসের জন্য। কিন্তু এরপর কী হবে? তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতার ফুটপাতের দোকানিরা। এই প্রতিবেদনে থাকছে বইপাড়া কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতের কথা।
Advertisment
কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতে অধিকাংশই বইয়ের দোকান। এই বই দোকানগুলি হাল আমলের নয়। অপারেশন সাইনসাইনের সময় এদিকে সরকার সেভাবে নজর দেয়নি। তবে হাঁটার মতো জায়গা রাখতে দোকানগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। এবার এখনও পর্যন্ত কলেজ স্ট্রিটে হাত দেয়নি পুলিশ বা পুরসভা। তবে সার্ভে চলছে ফুটপাতের দোকান নিয়ে। কত দোকান, একজনের একাধিক দোকান আছে কিনা, বাইরের রাজ্যের নতুন কোনও হকার আছেন কিনা, হাঁটার পজিশন কেমন আছে, ফুটপাতের ওপর দোকানের সামনে বইয়ের স্টক, নানা কিছু। এরই মধ্যে ফুটপাতের বইয়ের দোকানিরা আতঙ্কে দিন গুনছেন। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? তা নিয়েই বাড়ছে চিন্তা।
অনলাইন বা পিডিএফের যুগে বইয়ের বাজার অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। তারই মধ্যে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে যে কোনও বইয়ের দোকানকেই। ৪৬ বছর ধরে কলেজস্ট্রিটের ফুটপাতের দোকানে বসছেন দীপক পট্টনায়ক। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "উচ্ছেদ অভিযান দেখে আতঙ্ক তো হয়। যতই প্রতিরোধ, প্রতিবাদ করি না কেন রাজাদের নির্দেশ প্রজাদের মানতেই হবে। কলেজে স্ট্রিটে মাঝে-মধ্যেহকার উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় অপারেশন সানসাইনের সময় আমরা টিকে গিয়েছে। সেই সময় একটা গাইডলাইন তৈরি হয়েছিল। তখনই বলেছিল ওয়ান থার্ড নিয়ে দোকান করতে হবে। এমনিতেই অনলাইন, পিডিএফ, জেরক্সের কারণে বহু কষ্টে টিকে আছি। আমাদের ট্রেড লাইসেন্সও আছে।"
কলেজ স্ট্রিটের বই পাড়া। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।
কলেজ স্ট্রিটে ফুটপাতের বইয়ের দোকানগুলি ঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য ৮-৯টি ইউনিটে ভাগ করা আছে। এখানে ফুটপাতে শুধু বইয়ের দোকান রয়েছে ৭০০-৮০০। কিছু ক্ষেত্রে দোকানের সামনে পৃথক ভাবে ফুটপাতে বইয়ের স্টক রাখা আছে। সেখানে হাঁটাচলায় অসুবিধা হচ্ছে বলে দোকানিদের একাংশ জানিয়েছেন। দু'দিকে দোকান বা এই ধরনের বইয়ের স্টক রাখা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বইপাড়ার বঙ্কিম পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "এটা নিউ মার্কেট, গড়িয়া নয় কলেজ স্ট্রিট বই পাড়া। ঐতিহ্যপূর্ণ জায়গা। স্বাধীনতার আমল থেকে রয়েছে। কিছু হয়তো বেরিয়ে চলে এসেছে এক্তিয়ারের বাইরে। সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে। সবাই সহযোগিতা করবে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রশাসন কাজ করবে। বেকারত্ব যেভাবে বেড়েছে। হকার উচ্ছেদ নয়। দু সাইড নয়, এক সাইডে বসতে হবে। পথচলতি মানুষ যেন হাঁটতে পারে। সেই জায়গাটা করতে হবে। আমরা সহমত। এক ব্যক্তির দুইয়ের অধিক ডালা হবে না। বাইরের রাজ্যের লোক আছে যাঁদের কলকাতার নানা ফুটপাতে ৪-৫টা ডালা আছে।"
১৮৮৬-তে স্থাপিত, ১৪০ বছরের দোকান দাশগুপ্ত কোম্পানি অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড। দোকানের মালিক অরবিন্দ দাশগুপ্তর বক্তব্য, "আমাদের দোকানের হোর্ডিং দেখা যায় না, লোকে খুঁজে পায় না। আমরা চাই ভালো পড়াশোনার পরিবেশ। বড় দোকান মার খাওয়ার ফলে উঠে যাচ্ছে। দোকান কর্মচারিদের দেখতে হয়। হকারদের পুনর্বাসন করুক। প্রয়োজনে বর্ণপরিচয় মার্কেটে জায়গা দিতে পারে। এদের জন্য পৃথক হকার জোন করতে হবে। ঐতিহ্য বললে হবে না।"