Ratan Kahar: এ যেন মেঘ না চাইতেই জল পাওয়া। জীবনে অনেক কিছুই চেয়েছিলেন, তবে সবটা আর পাওয়া হয়ে ওঠেনি। অবশেষে না চেয়ে পাওয়ার মতোই অতর্কিতে একটি ফোন আসে তাঁর কাছে। জানানো হয় পদ্মশ্রী (Padma Shri) পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে রতন কাহারকে (Ratan Kahar)। ফোনটি ধরেছিলেন ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের স্রষ্টা রতন কাহারের ছেলে। তবে ফোনে এটুকু জানার পরেই আর কিছু জিজ্ঞেস করেননি তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই বছর মোট ৩৪ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করার জন্য। এই ৩৪ জনের তালিকায় রয়েছেন বীরভূমের ভাদু লোক সংগীত শিল্পী রতন কাহার। রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমের (Birbhum) বাসিন্দারা তো বটেই, গোটা রাজ্যে সংগীতপ্রেমী মানুষের মধ্যে আনন্দের সীমা নেই। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সর্বত্র রতন কাহারের নামের জয়জয়কার। অনেকেই বলছেন অবশেষে তিনি জীবনের সায়াহ্নে এসে তাঁর যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন।
৮৮ বছর বয়সে রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অনন্য এই সম্মান পাওয়া প্রসঙ্গে রতন কাহার বলেন, “আমি খুব আনন্দিত, আমি খুব গর্বিত।” এর পাশাপাশি এমন সম্মান পাওয়ার আগে তিনি যে সাধারণ কিছু মানুষ ছাড়া সেই ভাবে কারো কাছে সম্মান পাননি সেই বিষয়টিও ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন। রতন কাহারের জীবনে পদ্মশ্রী সম্মান নতুন এক অধ্যায় তৈরি করল বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনেরা।
আরও পড়ুন- Padma Awards 2024:পদ্মভূষণ মিঠুন চক্রবর্তী, ঊষা উত্থুপ, বাংলা থেকেই পদ্ম সম্মান পেলেন আরও কে কে?
রতন কাহার একজন ভাদু, টুসু, আলকাব, ঝুমুরের মতো গান নিয়ে সংগীত রচনা এবং পরিবেশন করে থাকেন। তবে তার জীবনে সবচেয়ে বড় আলোচনার গানটি হল ‘বড়লোকের বিটি লো’। এই গান নিয়ে চরম বিতর্ক রয়েছে। এমনকী এই গান নিয়ে বছর কয়েক আগে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন র্যাপ সিঙ্গার বাদশা। তিনি রতন কাহারের অনুমতি ছাড়াই এই গান ব্যবহার করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিষয়টি তার কানে গেলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং রতন কাহারকে আর্থিকভাবে সাহায্যও করেছিলেন।
কেন্দ্রের তরফে এই সম্মান পেয়ে বর্ষীয়ান এই সংগীতশিল্পী আরও বলেন, "অনেকদিনই গান-বাজনার জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। বহু অভাব-অনটনের মধ্যেও গান চালিয়ে গিয়েছি। গান না গাইলে আমি বাঁচতে পারতাম না। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হচ্ছে। আমি আজ দারুণ খুশি। বড়লোকের বিটি লো গানটা ১৯৭২ সালে লিখেছিলাম। ১৯৭৬ সালে স্বপ্না চক্রবর্তী গানটি রেকর্ড করেছিলেন। তবে আমার উপর অবিচার হয়েছিল। সুরকার-গীতিকার হিসেবে আমার নাম উল্লেখ করেননি।"