Ram Navami 2025: মালদার পর ফের রামনবমীর শোভাযাত্রায় সম্প্রীতির বার্তা। ‘হিন্দু-মুসলিম ভাইভাই’ স্লোগানে আওয়াজ তুললেন দুই ধর্মের মানুষজন। রবিবার এমনই বেশ কিছু ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর শিলিগুড়ি। চারদিকে ধর্মে ধর্মে বিভাজনের মধ্যে রামনবমীতে যেভাবে মুসলিম ধর্মের লোকজন এগিয়ে এসে শোভাযাত্রা পা মেলালেন তা থেকে শিক্ষা নিক গোটা বিশ্ব। এমনই আশা শহরের আম আদমির।
ইদের আগে মোথাবাড়িতে সন্ত্রাসের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। রামনবমীর আগে রাজ্যের হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ঘোষণা করেছিলেন, রামনবমীতে যেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন বাইরে না বেরোয়। অশান্তির আশংকায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কঠোর করেছে রাজ্য প্রশাসন। অপ্রীতিকর যে কোন পরিস্থিতি এড়াতে জায়গায় জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
এতকিছুর মাঝে রামনবমীর মিছিলে লক্ষ্য করা গেল সম্প্রীতির বার্তা। রবিবার সকাল থেকেই রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে ব্যপক উন্মাদনা লক্ষ্য করা গিয়েছে শিলিগুড়িতে। প্রচুর মানুষ গেরুয়া পতাকা ও গেরুয়া বসন পরে শামিল হয়েছেন রামনবমীর শোভাযাত্রায়। এদিন রামনবমীর শোভাযাত্রা শিলিগুড়ির বর্ধমান রোড ধরে যাওয়ার সময় শোভাযাত্রায় পা মেলালেন কারবালা কমিটির মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
কমিটির তরফে শোভাযাত্রায় শামিল প্রত্যেকের জন্য ঠান্ডা পানীয়ের বন্দোবস্ত করেছিলেন। করানো হয় মিষ্টি মুখ। সেই সঙ্গে শোভাযাত্রায় ছিটানো হয় ফুলের পাপড়ি। শুধু তাই নয়, একে অপরকে আলিঙ্গন করতেও দেখা গিয়েছে। স্লোগান ওঠে ‘হিন্দু-মুসলিম ভাইভাই’ ।
কারবালা কমিটির পক্ষে জানানো হয়, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মিলেমিশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ তাঁরা। সেই বার্তা দিতেই আজ রামনবমীর মিছিলে তাঁরা পা মিলিয়েছেন, এবং হিন্দু ভাইদের জন্য মিষ্টি ও ঠান্ডা পানীয়ের আয়োজন করেছেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনের এমন ব্যবহারে আপ্লুত অনেকেই। তারাও জানান, এভাবেই শান্তিপূর্ণভাবে সব ধর্মের মানুষ এক হয়ে থাকতে চান অখণ্ড ভারতে।
এদিন শুধু বর্ধমান রোডই নয়, একই দৃশ্য নজরে এসেছে শিলিগুড়ির হাসমিচক, ফুলবাড়ি, সহ আরও বহু জায়গায়। তাই রামনবমীর এমন সম্প্রীতির ঘটনায় একেবারেই প্রাসঙ্গিক কাজী নজরুল ইসলামের লেখা, ‘একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তাঁর নয়নমণি হিন্দু তাহার প্রাণ।’