West Bengal SSC Scam : সুপ্রিম (Supreme Court) নির্দেশে এরাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি বাতিল হয়েছে। জেলায়-জেলায় কোথাও ৫০০ কোথাও ৭০০ কোথাও বা হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। তৃণমূলের তরফে বারে বারে তাঁদের ভরসা রাখার কথা বলা হয়েছে। চাকরিহারাদের অভয় দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রী। তবুও তাতে আর আস্থা রাখতে পারছেন না চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। হুঁশিয়ারির সুরে তারা সাফ জানিয়েছেন, 'পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে সময় দিচ্ছি', না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের তরফে।
চাকরিহারাদের হুঁশিয়ারির পরই তড়িঘড়ি রাজ্যের তরফে আগামীকাল অর্থাৎ ৭ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের সঙ্গে আলোচনাতেও বসতে সম্মত হয়েছেন। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্যার সুষ্ট সমাধান না হলে পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের তরফে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের ১২-১৩টি মঞ্চ সম্মিলিত ভাবে আগামী ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে।
এদিকে সর্বোতভাবে চাকরি হারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দল নেতা রাহুল গান্ধী। চাকরিহারাদের তরফে বিরোধী দলনেতার কাছে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লেখার জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ। তবে চাকরি হারাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি দেখা করবেন সেই বিষয়ে কোন নিশ্চয়তা দেন নি বিরোধী দলনেতা। এদিকে চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, "আমি ৭ এপ্রিল ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাদের কাছে যাব। তাদের কথা শুনব। তাদের বলব, ধৈর্য হারাবেন না। মানসিক চাপ নেবেন না।”
রাজ্যের হাজার-হাজার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা আজ দিশেহারা। সংসার-দুধের সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-কে নিয়ে কী করবেন তা ভেবেই পাচ্ছেন না তাঁরা। রাজ্যের তরফে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীর তরফে মিলেছে আশ্বাস। এসবের মাঝে বিজেপির তারকা নেতা রুদ্রনীল ঘোষ এক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন। পোস্টে রুদ্রনীল মমতার একটি হাসি মুখের ছবির পাশে সুপ্রিম কোর্টের ছবি বসিয়ে তার উপর লিখেছেন, "২৬ হাজার চাকরি খেলাম, অপূর্ব তার স্বাদ, ২৬শে'তেই নিচ্ছি বিদায় চোর ক্রিমিনাল কাঁদ"। সেই সঙ্গে ২০১৬-এর এসএসসি প্যানেল বাতিলের জন্য তিনি দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। পোস্টের সঙ্গে তিনি তাঁর ক্যাপশনে লিখেছেন , দায়ী একজন।। যিনি ঘুষ দেওয়া অবৈধদের বাঁচাতে হাজার হাজার যোগ্য ছেলেমেয়ের সর্বনাশ করলেন তথ্য লুকিয়ে"।
এখানেই শেষ নয়, আরও একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপির তারকা নেতা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে হ্যাশট্যাগ ছোড়'দি দিয়ে একটি প্যারোডির মাধ্যমে সরাসরি চাকরি বাতিল ইস্যুতে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন। ক্যাপশনে রুদ্রনীল লিখেছেন, "আজ #ছোড়দি'র জন্য দু'লাইন....। যাদের সর্বনাশ করলেন,তারা ছেড়ে দেবে না,হিসাব নেবেই"। তবে কেবল রুদ্রনীল একা নয়। এর আগেও এসএসএসির চাকরি বাতিল মামলায় রাজ্য সরকারকে একহাত নিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য সহ একাধিক বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। 'তৃণমূলের দুর্নীতির মাশুল গুণতে হল হাজার-হাজার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের',চাকরি বাতিল ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) তীব্র আক্রমণ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষেরও।