অচেনা ভাইদের কাছে পেয়ে ধান, দুর্বায় আশীর্বাদ দিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা করলেন নিষিদ্ধপল্লির বোনেরা। ভাইফোঁটার পর্বে খাওয়ানো হলো রংবাহারি মিষ্টিও। ভাইরাও বা কম কীসের! রকমারি উপহারে বোনদের মন একঝটকায় কেড়ে নিলেন। এভাবেই বৃহস্পতিবার মালদার হংসগিরি লেনের নিষিদ্ধপল্লিতে ভাইফোঁটা উৎসব পালিত হল।
Advertisment
দুর্বার সমন্বয় মহিলা কমিটি এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে যৌনপল্লির কিছু মহিলাদের নিয়েই ভাইফোঁটা উৎসব পালিত হয়। অচেনা ভাইদের কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন আয়োজক বোনেরা। তাঁদের বক্তব্য, এরকম ভাবে আমরা কাউকে ভাই বলে কাছে পাবো, ওঁদের আশীর্বাদ মিলবে, কল্পনাতেও ভাবিনি। আজকের ভাইফোঁটার উৎসব যেন আমাদের কাছে রূপকথার গল্পের মতো।
ভাইদের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেছি। এটাই অনেক আমাদের কাছে। আর সেই অচেনা ভাইয়েরাই উপহারে ভরিয়ে তুলেছেন। বৃহস্পতিবার দেশজুড়েই পালিত হয় ভাইফোঁটার উৎসব। বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় রীতি মেনে এই উৎসবের প্রচলন রয়েছে। মালদাতেও সকাল থেকেই ভাইফোঁটা উৎসবে বিভিন্ন জায়গায় ধূমধাম করে হতে দেখা গিয়েছে। ভাইফোঁটা উৎসবকে ঘিরে মাছ, মাংসের বাজার এবং মিষ্টির দোকানগুলোয় ছিল লক্ষণীয় ভিড়।
তারই মধ্যে মালদায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি এরকম অভিনব ভাইফোঁটা উৎসবের আয়োজন করেছিল। এই কর্মকাণ্ডকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মকর্তা তমালকৃষ্ণ বসাক বলেন, 'আমরা গত পাঁচ বছর ধরে হংসগিরি লেনে দুর্বার সমন্বয়ে মহিলা কমিটির সহযোগিতায় এই ভাইফোঁটা উৎসব করে আসছি। একটা দিন অন্তত সমাজের মধ্যে আর পাঁচ জন সাধারণের মতই স্থান পাক নিষিদ্ধপল্লির বোনেরা।' এদিন একে অপরকে মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি উপহার দিয়ে অচেনা বোনেদের আশীর্বাদ করেছেন ভাইয়েরা। ওঁরা যাতে সারা বছর ভালো থাকে, সেই কামনাও করেছেন।