ভাতের হোটেলে মদকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য। বর্ধমানে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে রহস্যজনকভাবে প্রথমে ৪ জনের মৃত্যু হয়, বেশ কয়েকজন অসুস্থও হয়ে পড়ে। শনিবার অসুস্থ আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এরপর যথারীতি চোলাইয়ের ঠেক ভাঙার অভিযান শুরু হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায়। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও একই কাজ করছে পুলিশ। শনিবার বর্ধমানে সমস্ত মদের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে প্রশাসনের নির্দেশে। বর্ধমান শহরে ভাতের হোটেলে মদ্যপানের ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠে এসেছে। উঠে আসছে নানা তথ্য।
দু'জন মৃতের পরিবারের স্পষ্ট দাবি, ভাতের হোটেলে মদ কিনে খেয়েই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যদিও হোটেল মালিকের পরিবার বাকি দু'জনের বিষয়ে অন্য কথা বলেছে। বর্ধমানের এই ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। অভিজ্ঞ মহলের প্রথম প্রশ্ন, ভাতের হোটেলে অবাধে মদ বিক্রি করার লাইসেন্স কোন সরকারি কর্তৃপক্ষ দিয়েছে? দ্বিতীয়ত ওই মদের গুণগত মানের বিষয়ে কে দায় নেবে? তাহলে কি পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় এই বেআইনি কারবারের খোঁজ রাখেনি কেউ? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছে অভিজ্ঞ মহল।
বর্ধমান শহরে তিনকোনিয়া পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে জিটি রোড ধরে লক্ষ্মীপুর মাঠ হয়ে দু'দিকে একাধিক ভাতের হোটেল রয়েছে। জাতীয় সড়কের দু'ধারেও রয়েছে এমন হোটেল। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই হোটেলগুলিতে সরকারি 'ক্যাপটেন' সাজিয়ে রাখা হত। হোটেলে পুলিশ হানা দিলেও যাতে খুব বেশি ঝামেলায় পড়তে না হয়। তাছাড়া অন্য ব্র্যান্ডও এই সব হোটেলে পাওয়া যায় কিনা তা খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন- অমরনাথে হড়পা বানে মৃত্যু-মিছিল, শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস
তদন্তকারীদের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন, এই সব হোটেল থেকে প্রাপ্ত মদের গুণগত মানের পরীক্ষা কারা করছে? সেই মদ কোথা থেকে আসছে? সেই বিষয়টাও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। দুই পরিবার মদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে, তবে কোন ব্র্যান্ডের মদ সেব্যাপারে তাঁরা কিছু জানাননি। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই 'ক্যাপটেন' উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, ভাতের হোটেলে মদের এই অবাধ কারবার দীর্ঘ দিন ধরে চলছে কী করে? কারা মদত দিচ্ছে? অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, কোনও বড় ঘটনা না ঘটলে সরকারের টনক নড়ে না। পোস্টমর্টেম রিপোর্টও এখনও সামনে আসেনি। তবে রিপোর্টে যাই থাকুক পুলিশি অভিযান প্রমাণ করে দিয়েছে ভাতের হোটেল মদ বিক্রির রমরমা কারবার।