Advertisment

বেশি টিফিনের প্যাকেট না পেয়ে মহিলা বিডিওকে অশালীন কটূক্তি, কাঠগড়ায় তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ

দুর্ব্যবহারের ঘটনার বিহিত চেয়ে বিডিও সুবর্ণা মজুমদার বর্ধমান উত্তরের মহকুমা শাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Burdwan: TMC leader heckles Woman BDO sparks row

অভিযুক্ত শক্তিপদ পাল ওরফে বাবলু শুধু তৃণমূলের নেতাই নয়, তিনি বর্ধমান-২ ব্লকের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পদেও রয়েছেন। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

সরকারি বৈঠকে মহিলা বিডিওর সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ ও ’অশালীন আচরণ’ করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠেছে বর্ধমান ২ ব্লকের বাসিন্দা মহলে। অভিযুক্ত শক্তিপদ পাল ওরফে বাবলু শুধু তৃণমূলের নেতাই নয়, তিনি বর্ধমান-২ ব্লকের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পদেও রয়েছেন। দুর্ব্যবহারের ঘটনার বিহিত চেয়ে বিডিও সুবর্ণা মজুমদার বর্ধমান উত্তরের মহকুমা শাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও কর্মাধ্যক্ষ শক্তিপদ পাল দুর্ব্যবহারের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন,“বিডিও ম্যাডামের সঙ্গে তাঁর তর্কবিতর্ক হয়েছে “।

Advertisment

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,গত ১৩ মে ছিল বর্ধমান-২ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিও ও কর্মাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ ওই বৈঠকেই টিফিনের প্যাকেট পাওয়া নিয়ে বিডিও সুবর্ণা মজুমদারের সঙ্গে চরম বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শক্তিপদ পাল। তর্ক-বির্তকের মধ্যেই শক্তিপদ পাল বিডিওকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন ও তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

এই বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অরুণ গোলদার বলেন, “বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ও দাবিদাওয়া নিয়ে সদস্য ও কর্মাধ্যক্ষরা আলোচনা করেন। সেখানে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও হয়। তবে ওইদিন শক্তিপদ পাল কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। সেটা তিনি না করলেই ভাল করতেন। এটা নিয়ে আর বির্তক না হলেই ভাল হয়।" এর বেশি আর কিছু বলতে অস্বীকার করেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। এদিকে ঘটনা বিষয়টি নিয়ে মহকুমা শাসকের কাছে বিডিও ম্যাডামের অভিযোগ দায়ের করার বিষয়টি শনিবার রাতে জানাজানি হয়।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে এদিন বিডিও সুবর্ণা মজুমদারকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “যা জানানোর সেটা আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। এখন আর আমি এই বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করব না“। জানা গিয়েছে ,বিডিও সুবর্ণা মজুমদারের অভিযোগ পত্র মহকুমা শাসক শক্তিগড় থানায় পাঠিয়ে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

আরও পড়ুন নদী নাকি হাসপাতাল! খানিক্ষণের বৃষ্টি শেষে বোঝা দায়, চরম দুর্ভোগ

অভিযুক্ত জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা শক্তিপদ পাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার বাড়িতেও মা, বোন, মেয়ে আছে। তাই একজন মহিলার সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করতে হয় তা আমি জানি। বৈঠকে বিভিন্ন উন্নয়ন বিষয়ে নিয়ে যেমন আলোচনা হয় তেমনই তর্কবিতর্কও হয়। এটাই স্বাভাবিক। আমি দশ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আছি। এর আগে ব্লকে তিন জন মহিলা বিডিও ছিলেন। সবার সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক ছিল। আমার বিরুদ্ধে বিডিও ম্যাডাম মিথ্যা অভিযোগ করেছেন“।

পাশাপাশি পাল্টা অভিযোগ এনে কর্মাধ্যক্ষ শক্তিপদ পাল বলেন, “চার বছরে উন্নয়ন কাজের জন্য কোন বরাদ্দ আমি পাই নি“। শক্তিপদ পাল এমনটা দাবি করলেও ব্লকের অপর এক কর্মাধ্যক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কর্মাধ্যক্ষ শক্তিপদ পাল টিফিনের প্যাকেট বেশি করে নিয়ে বাড়ি চলে যান। তা নিয়েই ওইদিন বৈঠকে অশান্তির সূত্রপাত ঘটে ।

আরও পড়ুন বাতিল টায়ারেই বাজিমাত, ঝাঁ চকচকে রাস্তা গড়ে নজির পঞ্চায়েতের

এলাকার বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, মহকুমা শাসকের কাছ থেকে ঘটনা সবিস্তার শুনে আমার নিজেরই খারাপ লাগছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, “ওই দিন অপমানিত বিডিও ম্যাডামের চোখে জল চলে এসেছিল। বেপরোয়া ওই কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিলে আমাদের কিছু আর বলার নেই“। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ’দল এসব বরদাস্ত করে না।য দি ওই কর্মাধ্যক্ষ অশালীন ভাষা প্রয়োগ করে থাকেন তাহলে বিডিও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। দলও কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে’।বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ’তৃণমূল কংগ্রেসের এটাই কালচার। তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের দুর্ব্যবহার ও চোখরাঙানি থেকে বাংলায় কেউ রেহাই পাচ্ছেন না’।

tmc East Burdwan
Advertisment