রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভূমিকা নিয়েই আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। হতাশা প্রকাশ করেছিল এ রাজ্যের গেরুয়া শিবির। মাঝে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সেই হতাশায় কিছুটা প্রলেপ পড়েছিল। কিন্তু, শিবপুর ও রিষড়ায় হিংসার পর বিজেপির সেই অস্বস্তি ফের চাগিয়েছে। অন্তত মঙ্গলবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যেই তা স্পষ্ট।
শিবিপুরের ঘটনার পর সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে। গতরাতে রিষড়ায় অশান্তি ছড়াতেই তড়িঘড়ি উত্তরবঙ্গ সফর ছেঁটে কলকাতায় ফেরেন তিনি। সোজা রিষড়ায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। শান্তি প্রতিষ্ঠায় কড়া বার্তা দেন তিনি। তারপরও রাজ্যপালে ভূমিকায় অসন্তুষ্ট শুভেন্দু অধিকারীরা। সম্ভবত মমতা প্রশাসনের সরাসরি নিন্দা না করাই এর বড় কারণ হতে পারে।
এদিন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করতে দ্বিধা করেননি বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এই রাজ্যপাল মহোদয় গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বা জগদীপ ধনকড়ের মতো ভূমিকা এখনও দেখাতে পারেননি। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি আগেও বলেছি, এখনও তাতে অনড় রয়েছি। আমি চাই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করুন। এই রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট না চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকাকে বলুন শিবপুর ও রিষড়া থানা এলাকাকে উপদ্রুত ঘোষণা করে ৩৫৫ ধারা জারি করতে। শিবপুর ও রিষড়া থানা এলাকার নিয়ন্ত্রণ কয়েক মাসের জন্য কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীরহাতে তুলে দেওয়া হোক। আমরা চাইব, বাংলার রাষ্ট্রবাদী জনগণকে বাঁচাতে রাজ্যপাল ভূমিকা নিন। রাজ্যপাল হিসাবে রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চত করাই আমার লক্ষ্য।'
আরও পড়ুন- বড় চমক লকেটের, লোকাল ট্রেনেই রিষড়ায় সাংসদ, পুলিশ আটকাতেই রনংদেহী মেজাজ
তবে শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সন্ধ্যায় এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেন, 'যে কেই আমার সমালোচনা করতেই পারেন। তবে সবার ওপরে সংবিধান। রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী সকলেই সংবিধানের আওতায়। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে, এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। আজ পরিস্থিতি জানতেই রিষড়ায় গিয়েছিলাম। বিরোধীদের সরব হওয়া গণতন্ত্রে নিয়ম। কিন্তু এখন শান্তির জন্য সব রাজনৈতিক দল উদ্যোগী হোক। মনে রাখতে হবে রাজ্যপাল পদ রাজনীতির ঊর্ধ্বে।'
আরও পড়ুন- থমথমে রিষড়ায় রাজ্যপাল, বন্ধ দোকানপাট, স্থানীয়দের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট