প্রায় চার মাস ধরে খোঁজ নেই ঘনার। শান্ত ও অত্যন্ত মিশুকে স্বভাবের ঘনাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘনার শোকে পাথর হয়ে রয়েছেন কল্যাণী আদালত চত্বরের আট থেকে আশি প্রত্যেকেই। পুলিশে জানিয়েও ফল না মেলায় শেষমেশ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঘনা-প্রেমীরা। বিচারপতি শম্পা সরকার ঘনা-নিখোঁজ কাণ্ডে কল্যাণী থানার পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। ঘনার খোঁজে এবার রানাঘাট পুলিশ জেলার এসপি-র নেতৃত্বে পৃথক তদন্তকারী দল তৈরির নির্দেশ হাইকোর্টের।
কল্যাণী আদালত চত্বরে ঘনাকে চেনেন না এমন মানুষ মিলবে না। বাচ্চা থেকে বুড়ো এতল্লাটের প্রত্যেকেরই অত্যন্ত প্রিয় এই ঘনা। এহেন ঘনারই খোঁজ নেই মাসের পর মাস ধরে। কোথায় গেল সে, ভেবেই পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
শান্ত স্বভাব ও গোলগাল চেহারার ঘনা আসলে একটি শুয়োর। মিশুকে স্বভাবের এই ঘনা এক ঝটকায় মিশে যেতে পারে প্রত্যেকের সঙ্গে। কল্যাণী আদালত চত্বরের আইনজীবী থেকে শুরু করে দোকানি ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘনাকে তাঁদের আপনজন হিসেবেই ভাবেন।
কল্যাণী আদালত চত্বরে বছর চারেক ধরেই ঘনার বাস। আসতে-যেতে ঘনার জন্য প্রত্যেকেই হাতে করে কিছু নিয়ে আসেন। কেউ দেন বিস্কুট, কেউ বা রুটি কেউ বা ফল। যে যাই দিন, শান্ত ঘনা ঘাড় নেড়ে মহানন্দে সেই খাবার খায়। এলাকার কুকুরগুলির সঙ্গেও যথেষ্ট সদ্ভাব রয়েছে তার। প্রায়শই কুকুরদের সঙ্গে বসে আড্ডা জমাতেও দেখা গিয়েছে ঘনাকে। এহেন ঘনারই খোঁজ নেই প্রায় চার মাস ধরে।
আরও পড়ুন- পাতালেই লক্ষ্মীলাভ! শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ মেট্রো রুটে ক্রমেই বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা
গত ২৬ মার্চ থেকে খোঁজ মিলছে না নাদুস-নুদুস চেহারার ঘনার। অভিযোগ, ঘনাকে একটি গাড়িতে চাপিয়ে কেউ বা কারা অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। এক ব্যক্তি সকালে রাস্তায় বেরিয়ে ঘনার অপহরণ নিজে চোখে দেখেছেন বলে দাবি তাঁর। ঘনাকে অপহরণের ঘটনা ওই ব্যক্তি মোবাইল বন্দিও করেছেন। সেই ফুটেজ নিয়েই কল্যাণী থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল, লাভ হয়নি। এবার তাই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঘনা-প্রেমীরা।
আরও পড়ুন- ‘পাহাড়ি বিছে’র পশুপ্রেম, গন্ডার দত্তক নিলেন বাইচুং
উচ্চ আদালত কিন্তু বিষয়টিকে যথষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। ইতিমধ্যেই রানাঘাট পুলিশ জেলার এসপি-র নেতৃত্বে ঘনাকে খুঁজে বের করতে তদন্তকারী দল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। এরই পাশাপাশি ঘনা নিখোঁজ কাণ্ডে এর আগে যে পুলিশ অফিসার তদন্ত করছিলেন তাঁর বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।