বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সন্মানহানি’ এবং ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’-র অভিযোগে তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামিকাল থেকেই ওই তিন পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে পারবেন। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত 'লঘু পাপে গুরুদণ্ড' বলে জানিয়েছে বিচারপতি রাজশেখর মানথা। উপাচার্যের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি।
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ছাতিমতলায় এক অনুষ্ঠান চলাকালীন কিছু দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে সামিল হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। সেই অবস্থান বিক্ষোভ ‘বিশ্বভারতীর সন্মানহানিকর’, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’ এর পাশাপাশি অর্থনীতি বিভাগে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে তিন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির রিপোর্টে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ সত্য বলে জানানো হয়। তারপরই তিন পড়ুয়াকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
গত ২৩ অগাস্ট রাতে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র তথা এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌ, হিন্দি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী ও অপর ছাত্রনেতা ফাল্গুনী পানকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান পড়ুয়ারা। কর্তৃপক্ষ তা না মানলে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন- পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে CBI তলব, সোমবার হাজিরার নির্দেশ
এর বিরুদ্ধে উপাচার্যও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। গত সপ্তাহে আদালতের নির্দেশ ছিল, পড়ুয়ারা উপাচার্যের বাড়ি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অংশ আটকে অবস্থান করতে পারবেন না। খুলে দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনের গেটের তালা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সিসিটিভি বসাতে হবে, মাইকিং চলবে না।
এদিন শুনানির পর আবশ্য আদালতের রায়ে সাময়িক স্বস্তিতে বহিষ্কৃত পড়ুয়ারা। হাইকোর্টের বিচারপতি এদিন উপাচার্যের সিদ্ধান্তকে 'লঘু পাপে গুরু দণ্ড' বলে জানান। পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। নির্দেশে উল্লেখ, এরপর পড়ুয়াদের সবধরণের বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। বিচারপতি মনে করেন যে, উপাচার্য যদি নিজেকে আইনে চেয়ে বড় মনে করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত ব্যবস্থা নেবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন