সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মামলায় কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে আজ সকালে তলব করেছে সিবিআই। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে রাজীবকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা গিয়েছে। রবিবার সন্ধেয় রাজীব কুমারের লাউডন স্ট্রিটের একদা বাসভবনে ফের হানা দেয় সিবিআই। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ এই বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের এক দল। যদিও রাজীবের খোঁজ মেলে নি। এরপরই লাউডন স্ট্রিটের অদূরে পার্ক স্ট্রিটে ডিসি সাউথ মিরাজ খালিদের অফিসে যায় সিবিআই। লাউডন স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিটে ডিসি সাউথের অফিসের পর সিআইডির সদর দপ্তর ভবানী ভবনেও যায় সিবিআই। সেখানেও রাজীব কুমারকে সিবিআই নোটিস দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সিআইডি এডিজি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন রাজীব। সে কারণেই ভবানী ভবনে সিবিআই নোটিস দিতে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। কলকাতায় লোকসভা ভোটের মুখে রাজীবকে সিআইডি এডিজি পদ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন।
রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে সিবিআই। আগামীকাল সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ। pic.twitter.com/x8Z8s6WqAf
— IE Bangla (@ieBangla) May 26, 2019
আরও পড়ুন: সংকটে রাজীব কুমার, জারি লুক আউট নোটিশ
উল্লেখ্য, রবিবারই কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সুপারিশেই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়, যার উদ্দেশ্য হলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দেশ ছেড়ে যাওয়া আটকানো। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ মে, ২০২০ পর্যন্ত, অর্থাৎ আগামী এক বছর, দেশ ছাড়তে পারবেন না রাজীব কুমার।
প্রসঙ্গত, রাজীব কুমারের আইনি সুরক্ষার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজীবকে সাত দিনের আইনি সুরক্ষার সময় বেঁধে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে গত শুক্রবার। এরপরই বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল। কিন্তু আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়া হয়নি বলেই আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ১৬ মে সারদা মামলায় রাজীব কুমারের গ্রেফতারের অন্তর্বতী রক্ষাকবচ সরিয়ে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে কলকাতার প্রাক্তন নগরপালকে গ্রেফতার করতে আর কোনও বাধা নেই সিবিআইয়ের। তবে আইনি পদক্ষেপের জন্য রাজীব কুমারকে সাত দিনের সময় দিয়েছিল আদালত।
এর আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় লাউডন স্ট্রিটে কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের সরকারি বাসভবনে হানা দেয় সিবিআইয়ের একটি দল। এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই ‘নিরপেক্ষ’ জায়গা হিসেবে শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।