লালন শেখের মৃত্যুতে বেনজির পদক্ষেপ এবার সিবিআইয়ের। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দুই অফিসার-সহ মোট ৪ জনকে লালন-মৃত্যুতে সাসপেন্ড করা হল। সাসপেন্ড করা হয়েছে লালন শেখের পাহারার দায়িত্বে থাকা দুই কন্সটেবলকে। সাসপেন্ড হয়েছেন আরও দুই অফিসারও। সাসপেন্ডেড ৩ জনের নামে লালন শেখকে খুনের অভিযোগে দায়ের হওয়া এফআইআর-এ নাম ছিল।
রামপুরহাটের বগটুই গণহত্যর প্রধান অভিযুক্ত ছিল লালন শেখ। বগটুইয়ের তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের ডান হাত ছিল এই লালন। বগটুই হত্যাকাণ্ডের পরপরই গা ঢাকা দিয়েছিল লালন শেখ। ঘটনার ৯ মাস পর তাকে গ্রেফতার করে আনে সিবিআই। বোলপুরে সিবিআই হেফাজতে থাকালানীই মৃত্যু হয় লালনের। লালনকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে লালনের পরিবার। পরে রামপুরহাট থানায় কয়েকজন সিবিআই অফিসারের নামে অভিযোগও দায়ের করেন লালনের স্ত্রী।
এদিকে, নিজেদের হেফাজতেই লালন মৃত্যুতে অস্বসতিতে পড়ে যায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধেই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সরব হয় বিভিন্ন মহল। যা নিয়ে তীব্র অস্বস্তিতে পড়তে হয় সংস্তার কর্তাদেরও। এবার লালন মৃত্যুতে সিবিআইয়ের শীর্ষ মহলের নির্দেশেই সাসপেন্ড করা হল সংস্থার ২ অফিসার-সহ ৪ জনকে।
আরও পড়ুন- চড় কষিয়েও অধরা তৃণমূলকর্মী, থাপ্পড় খাওয়া BJP নেতার নামেই উল্টে মামলা
সাসপেন্ড করা হয়েছে ২ তদন্তকারী অফিসার ও দুই কনস্টেবলকে। সাসপেন্ড করা হয়েছে লালনের পাহারার দায়িত্বে থাকা দুই কন্সটেবলকে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। লালন খুনে সাসপেন্ডেড ৪ জনের মধ্যে ৩ জনের নাম তাঁর পরিবারের দায়ের করা এফআইএর-এ আছে।
এদিকে, লালন মৃত্যুতে ফের একবার শুভেন্দু অধিকারীকেই নিশানা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'এটা সিবিআইয়ের বিভাগীয় একটা ব্যবস্থা। এমন বড় ঘটনা ঘটলে এই তদন্ত হওয়া উচিত। এটা একটা রুটিন তদন্ত। তবে যেভাবে মৃত্যুটি হয়েছে তাতে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রশ্নের জবাব এখনও মেলেনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন ১২ ডিসেম্বর কিছু একটা ঘটবে। লালনের মৃত্যু হল ১২ তারিখ। এটা বেনজির ঘটনা। তাহলে শুভেন্দু অধিকারীকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না?'
আরও পড়ুন- FD-তে ৮.৩০% পর্যন্ত সুদ, ৪ সরকারি ব্যাঙ্কের তাক লাগানো স্কিম সম্পর্কে জানুন
অন্যদিকে, সিবিআইয়ের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের এই দফতরে যাঁদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আছে তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আওতায় শ'য়ে শ'য়ে লোকের থানায় মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রশ্ন উঠেছে। একটা ক্ষেত্রেও কোনও ব্যবস্থা হয়েছে? এটাই তো তফাত। এরা খুনি-চোরেদের আশ্রয় দেয়। সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে যাঁদের তদন্তে নাম এসেছে তাঁদের সাসপেন্ড করা হল। কীভাবে সত্যিকারের তদন্ত চালাতে হয় সেটা সিবিআইয়ের থেকে শেখা উচিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের।'