নন্দীগ্রামে কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতে তৃণমূলের 'শহিদ সভায়' চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। কুণালের উপস্থিতিতেই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল তুঙ্গে উঠল। মঞ্চে কারা থাকবেন, তা নিয়েই বিবাদ চরমে উঠল জোড়াফুলের নেতাদের মধ্যে। শেষমেশ পরিস্থিতি শান্ত করতে নাম না করে কুণাল নিশানা করলেন গেরুয়া শিবিরকে।
আজ 'নন্দীগ্রাম দিবস' পালন করছে তৃণমূল ও বিজেপি। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে আজ কার্যত একই এলাকায় সভা-মিছিল যুযুধান দুই-প্রতিপক্ষের। এদিন সকালে নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে সভা করে তৃণমূল। সেই সভাতেই কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতে শুরু হয় প্রবল তর্কাতর্কি। কুণালের সামনেই তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর নেতারা। কারা থাকবেন মঞ্চে, তা নিয়েই শুরু হয় গন্ডগোল।
জানা গিয়েছে, বিক্ষুব্ধদের অনেকে সেই সময় মঞ্চের নীচে ছিলেন। তাঁরাই মঞ্চে থাকা স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন। পরে মঞ্চ থেকে এক বিক্ষুব্ধকে উদ্দেশ্য করে কুণাল ঘোষ বলতে শুরু করেন, ''আমি এখানে আধ ঘণ্টা আগে এসেছি। তখন তুমি বলতে পারতে। শহিদ তর্পনের দিনে তুমি যদি এমন করো, তাহলে আমি বলতে বাধ্য হব, যে তোমার উদ্দেশ্য হচ্ছে অনুষ্ঠানটা নষ্ট করা। কেউ তোমায় পাঠিয়েছে।'' মুখে সরাসরি না বললেও কুণালের ইঙ্গিত ছিল বিজেপিরই দিকে, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন- ‘সব হাতের বাইরে, সরকারই কামড়াচ্ছে’, টেট-বিক্ষোভে পুলিশি সক্রিয়তার নিন্দায় দিলীপ
এদিন সকালে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে সভা করেছে তৃণমূল। তেমনই আজ দুপুরে এই গোকুলনগরেই বিজেপির মিছিলে শুভেন্দু অধিকারী। সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম দিবসে টানটান রাজনৈতিক উকত্তেজনায় কাঁপছে পূর্ব মেদিনীপুরের এই প্রান্ত। সপ্তাহ খানেক আগেই কুণাল ঘোষকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের সংগঠন দেখার দায়িত্ব সঁপেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। শুভেন্দুর জেলার নেতাদের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমন্বয় রক্ষার কাজটি করছেন কুণাল।
তবে শুভেন্দু গড়ে দলের দায়িত্ব কুণাল কাঁধে তুলে নেওয়ার পর থেকে তিনি বিন্দুমাত্র স্বস্তিতে নেই। জেলায় বিজেপির ঘর ভাঙাতে গিয়েই বেশি বেগ পেতে হচ্ছে কুণালকে। এক সময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া অনেককেই ফের দলে টানছেন কুণাল। এতেই ঘটছে বিপত্তি। এর আগেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে কুণাল ঘোষকে। তাঁদের দাবি, একসময় বিজেপির হয়ে কাজ করা লোকজনকে দলে টেনে আখেরে দলেরই ক্ষতি করছেন কুণাল।