মালদায় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের পার্টি অফিসের দখলদারি নিয়ে ধুন্দুমার কান্ড ঘটে গেল। রীতিমতো সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন এবং বর্তমান সভাপতি গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। মঙ্গলবার দুপুরে মালদা শহরের প্রাণকেন্দ্র রথবাড়ি এলাকায় জেলা কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি'র (ইনটাকের) কার্যালয়ের তালা ভেঙে ঢোকার অভিযোগ ওঠে বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে ।
প্রতিবাদ করায় প্রাক্তন মহিলা সভাপতিকে মারধোরের পাশাপাশি অফিস ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় (ভিডিও'র সত্যতা যাচাই করে নি সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যম)। দুই পক্ষের হাতাহাতিতে স্তব্ধ হয়ে যায় রথবাড়ির স্টেশন রোড সম্মুখীন এলাকা। ঘটনার খবর পেয়ে রথবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছায়। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন এবং বর্তমান সভাপতি উভয় পক্ষই ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ইনটাকের জেলা সভাপতি সঞ্জীব সরকারের সঙ্গেই মূলত বিবাদ বাঁধে প্রাক্তন মহিলা সভাপতি লক্ষী গুহের। একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা মারধরের অভিযোগ তোলেন।
আরও পড়ুন- Train Ticket Price Hike: আম-আদমির জন্য বড় খবর, দীর্ঘদিন পর বাড়ছে রেলের ভাড়া,এসি ও নন-এসি টিকিট বাবদ কত বেশি ভাড়া লাগবে?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র রথবাড়ি এলাকাতেই রয়েছে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ইনটাকের একটি পাকা স্থায়ী ভবন। যার বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। ৮০'র দশকে তৎকালীন জেলা ইনটাকের সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর বিশ্বনাথ গুহ'র নেতৃত্বে রথবাড়ি এলাকায় এই পার্টি অফিস গড়ে ওঠে। ২০০৮ সালে বিশ্বনাথ গুহের মৃত্যুর পর জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব তার স্ত্রী লক্ষী গুহকে দলের শ্রমিক সংগঠন ইনটাকের জেলা সভাপতি দায়িত্ব দেয়। দীর্ঘদিন ধরে এই পদ সামলান লক্ষ্মী গুহ। গত কয়েক বছর ধরে এই সভাপতির পদ নিয়ে শুরু হয় দলীয় কোন্দল।
পরবর্তীতে দলের জেলা নেতৃত্ব চলতি বছর কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি করা হয় সঞ্জীব সরকারকে। আর তারপরেই শুরু হয় বিবাদ।
কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ইনটাকের প্রাক্তন জেলা সভাপতি লক্ষ্মী গুহ বলেন, রথবাড়িতে এই পার্টি অফিসটি আমার স্বামী বিশ্বনাথ গুহ'র ব্যক্তিগত সম্পত্তি। এখানে কংগ্রেসের কোনও দখলদারি নেই। তবুও ওরা জোর করে এই পার্টি অফিস দখল করতে চাইছে। এটাতো আমার স্বামীর সম্পত্তি। কিন্তু এদিন সঞ্জীব সরকার দলবল নিয়ে অফিসে তালা ভেঙ্গে ঢোকার চেষ্টা করে। আমি বাঁধা দিলে ওরা আমাকে মারধর করে। টেনে হিঁচড়ে পার্টি অফিস থেকে বাইরে ফেলে দেয়। আমার ছেলেকে ওরা মারধর করেছে। প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশের কাছে নালিশ করেছি।
এদিকে ইনটাকের জেলা সভাপতি সঞ্জীব সরকার বলেন, এটা দলের সম্পত্তি। বিশ্বনাথ গুহ যখন কংগ্রেস দল করতেন, তখন তিনি এটি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন। এই সম্পত্তির কাগজপত্র লক্ষ্মী গুহের কাছে নেই। সুতরাং মৌখিকভাবে দাবি করলে সেটা নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হয় না। এদিন লক্ষী গুহ দলবল নিয়ে আমাদের এক কর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছে।
কংগ্রেসের দক্ষিণ মালদা সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী জানিয়েছেন, বিষয়টি দলগতভাবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে । পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, দুই পক্ষকে বলা হয়েছে ওদের প্রয়োজনীয় কাগজ দেখানোর জন্য। সেই মত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।