Mid day Meal Controversy: বাংলার স্কুলে চূড়ান্ত ধর্মীয় বিভাজন! হিন্দু-মুসলিম পড়ুয়াদের আলাদাভাবে মিড ডে মিল রান্নায় তদন্তের নির্দেশ

Purba Bardhaman-Mid day Meal Controversy: প্রাথমিকে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ! আলাদা রাঁধুনি দিয়ে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল রান্না।

Purba Bardhaman-Mid day Meal Controversy: প্রাথমিকে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ! আলাদা রাঁধুনি দিয়ে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল রান্না।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
আপডেট করা হয়েছে
New Update
পূর্ব বর্ধমানে মিড-ডে মিল বিভেদ  হিন্দু-মুসলিম আলাদা রান্না মিড-ডে মিল  পূর্বস্থলী প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক  মিড ডে মিল ধর্মীয় ভেদাভেদ  স্কুলে দ্বিজাতি তত্ত্ব বিতর্ক  পূর্ব বর্ধমান মিড ডে মিল স্ক্যাম  পশ্চিমবঙ্গ মিড-ডে মিল খবর  পূর্ব বর্ধমান ধর্মভিত্তিক মিড ডে মিল  হিন্দু-মুসলিম মিড-ডে মিল হেঁসেল আলাদা  সরকারি স্কুল ধর্মীয় ভেদাভেদ  মিড ডে মিল রান্না বিভাজন  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িকতা  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় বৈষম্য  পূর্বস্থলী মিড-ডে মিল দ্বিগুণ খরচ  স্কুল মিড ডে মিল ধর্ম বিভেদ  এই SEO ও URL ফরম্যাট অনুসারে আপনার Discover-ফ্রেন্ডলি হেডলাইন ও সারাংশ চাইলে সেটাও তৈরি করে দিতে পারি। জানাবেন?

প্রাথমিকে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ!

Mid day Meal Controversy: দ্বিজাতি তত্ত্ব, অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমানের ভেদাভেদ। এই তত্ত্বকে আঁকড়ে আজ থেকে ৭৭ বছর আগে ’ভারত’ ভাগ হয়েছিল। একই তত্ত্বে এবার ’দ্বিধা- বিভক্ত’ পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের হেঁসেল, রাঁধুনি ও রান্না করা খাবার।

Advertisment

আরও পড়ুন- স্বামীজির পাশাপাশি স্কুলে বাধ্যতামূলক মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই, কেলেঙ্কারির আরও এক অধ্যায়, কটাক্ষ বিজেপির

এই ঘটনা জানাজানি হতেই তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে জেলা ও ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। জেলাশাসক আয়েশা রাণী জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি মহকুমাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রভাব পড়া কিশোরীগঞ্জ- মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের নাদনঘাট থানা এলাকায় অবস্থিত। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পড়ুয়া সংখ্যা ৭২ জন। শিক্ষক ও শিক্ষিকা মিলিয়ে রয়েছেন চারজন। হিন্দু ও মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়ের পরিবারের ছেলে মেয়েরা এই স্কুলের শ্রেণীকক্ষে একসাথে বসে শিক্ষকের কাছে পাঠ নেয়। তা নিয়ে অবশ্য কোনও বিভেদ নেই। তবে 'বিভেদ’ চরমে মিড-ডে মিল নিয়ে।  

Advertisment

আরও পড়ুন- 'বাংলা ভাষায় কথা বলা অপরাধ?' রাজস্থানে বাংলার ৩০০ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিককে আটকের ঘটনায় 'বিস্ফোরক' মুখ্যমন্ত্রী

অন্যান্য বিদ্যালয়ের মত কিশোরীগঞ্জ- মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও মিড- ডে মিল রান্নার হেঁসেল ঘর রয়েছে। তবে বছরের পর বছর ধরে সেই হেঁসেল ঘরে অব্যাহত রয়েছে হিন্দু-মুসলমান দ্বিজাতি তত্ত্বের দাপট। সেই কথা মিড-ডে মিলের রাঁধুনিদের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষও অস্বীকার করতে পারেননি। স্কুলের রাঁধুনিদের একজন হিন্দু ,অপর জন মুসলিম। তাঁরাই জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ে মড-ডে মিল রান্নার হেঁসেল আলাদা। হিন্দু রাঁধুনি সোনালী মজুমদার আলাদা গ্যাসের উনানে রান্না করেন হিন্দু পরিবারের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল। আর অপর গ্যাসের উনুনে মুসলিম রাঁধুনি গেনো বিবি রান্না করেন মুসলিম পরিবারের পড়ুয়াদের মিড -ডে মিল। শুধু আলাদা আলাদা ভাবে রান্না করাই নয়, হেসেলে দুই সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল রান্নার উপকরণ থেকে শুরু করে বাসনপত্র ,হাঁড়ি,কড়াই, খুন্তি -সেসবও আলাদা আলাদা রয়েছে। এমনকি হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ৪৩ ও ২৯ জন পড়ুয়াকে মিড- ডে মিল খাওয়ানোও হয় আলাদা আলাদা স্থানে বসিয়ে। 

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলে এইভাবে হিন্দু ও মুসলিম দ্বিজাতি তত্ত্ব থাবা বসানো সত্ত্বেও কেন স্থানীয় পঞ্চায়েত তা নিয়ে আপত্তি তুললো না, সেই  প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও পূর্বস্থলীর নসরৎপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কানন বর্মন মঙ্গলবার জানান, বিদ্যালয়টিতে মিড-ডে মিল চালু হওয়ার পর থেকেই এমন ঘটনা চলে আসছে বলে এখন জানতে পেরেছেন। এমন কালচার যাতে বন্ধ হয়, তার জন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ  মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়।রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল ইসলামকে নিয়ে গর্বিত বাংলায় এমন ঘটনা বেমানান। অবিলম্বে এসব  বন্ধ হওয়া দরকার।"

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন,“আমি মাত্র এক বছর হল এই স্কুলে এসেছি। তার অনেক আগে থেকেই স্কুলে এই ভাবে মিড-ডে মিল রান্না হচ্ছে। এর কারণে মিড-ডে মিলের খাতে দ্বিগুণ খরচা হচ্ছে। এটা যাতে বন্ধ হয়,তার জন্য বুধবার তিনি বুধবার বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের  বৈঠক ডেকেছেন।”এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা গনেশ গোঁসাই বলেন, “স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকাটা ঠিক নয়। সরকারি স্কুলে হিন্দু ও মুসলিম ঘরের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আলাদা করে মিড-ডে মিল রান্না বন্ধ হোক, এটা আমিও চাই। কারণ ধর্ম নিরেপেক্ষতাই আমাদের ভারতবর্ষের গর্ব।" গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে দ্রুত বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা চলছে। 

আরও পড়ুন-  'উৎসব করে কি মানুষ মেরে দেবে?' ফুটফুটে মেয়েকে হারিয়ে কান্না থামছেই না মায়ের

burdwan Mid day Meal