ঘাটালের ফি বর্ষার ছবিটার বদল হল না। টানা বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন পশ্চিম মেদনীপুরের ঘাটাল। জল থইথই ঘাটালের পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে ঘাটালের ৬ নং ওয়ার্ডে বাড়িতেই জলে ডুবে মৃত্যু হল বছর চারেকের এক শিশুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের গম্ভীরনগরে ওই শিশুটির বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। বাড়িটির একতলায় কানায়-কানায় জল। গত রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গেই ঘুমিয়ে পড়েছিল শিশুটি। সকালে দম্পতির ঘুম ভাঙতেই ভয়াবহ দৃশ্য। একরত্তি সন্তানকে ঘরেই মৃত অবস্থায় জলে ভাসতে দেখেন বাবা-মা। সম্ভবত ঘুম থেকে উঠে কোনওভাবে জলে পড়ে গিয়েছিল শিশুটি।
জলে ডুবেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টির জেরে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকায় ইতিমধ্যেই জল জমেছে। জলের তোড়ে এদিন সকালে ঘাটালের চড়কতলায় আস্ত পাকা বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। যদিও বিপজ্জনক ওই বাড়িটি আগেই ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। সেই কারণেই হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
অন্যদিকে, গত কয়েকদিনে দফায়-দফায় ভারী বৃষ্টির জেরে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। জলের তোড়ে হুগলির খানাকুলে দামোদরের ২টি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। উল্টোদিকে, আরামবাগেও দ্বারকেশ্বর নদের আরও ৪টি বাঁধ ভেঙেছে। বাঁধ ভেঙে আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। জলবন্দি হাজার-হাজার পরিবার।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা প্রশাসনের। আরামবাগ, খানাকুলে সেনা নামানো হয়েছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। এলাকার সব স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই রাখা হচ্ছে দুর্গতদের। আপাতত দুটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে আরামবাগ ও পুরশুড়ায়।
আরও পড়ুন- জলের তোড়ে ভাঙল বাঁধ, প্লাবিত খানাকুল-আরামবাগের বিস্তীর্ণ প্রান্ত, নামল সেনা
অন্যদিকে, রাজ্যের একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ফের ডিভিসিকেই দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসি ড্যাম পরিস্কার করে না বলেই এরাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়েছে। আবার আসানসোলের বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার। আগে এত বৃষ্টি হয়নি। ফলে আসানসোল পুরো ডুবন্ত। একই হাল বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও। ঝাড়খণ্ড, বিহারে বৃষ্টি হলেই আমাদের সমস্যা ফেস করতে হচ্ছে। ড্যামে ড্রেজিং হয় না। ফলে খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের। এটা অন্যায়।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন