বালি খাদানের দখল ঘিরে সংঘর্ষে যুবককে কুপিয়ে খুন। তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে শনিবার রাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সিউড়ির বাঁশঝোড় গ্রামে। মুহুর্মুহূ চলে বোমাবাজি। বেমাা মেরে কুপিয়ে খুন করা হয় এক যুবককে। রাতভর অশান্ত ছিল গোট বাঁশঝোড়। তদন্তে নেমে তৃণমূলের প্রাক্তন কর্মাধক্ষ্য-সহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে।
গত কয়েক মাস ধরে বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে খুলে গিয়েছে বীরভূমের বালি খাদানগুলি। এগুলির মধ্যে বেশ কিছু বালি খাদান বেআইনিভাবে চলে বলে অভিযোগ। শনিবার রাতে সেই বেআইনি বালি খাদানের দখল নিয়েই সিউড়ির বাঁশঝোড় গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। লাঠি, বাঁশ নিয়ে চলে হামলা। পরে ব্যাপক বোমাবাজিতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বোমা মেরে কুপিয়ে খুন করা হয় শেখ ফইজুল নামে এক যুবককে।
তৃণমূল নেতা কাজল শা তার দলবল নিয়ে ফইজুলকে খুন করেছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। কাজল শা-ই হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বলে অভিযোগ তোলেন আরও কয়েকজন। তদন্তে নেমে পুলিশ তৃণমূল নেতা কাজল শা-সহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করে। এদিকে, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় শনিবার রাত থেকেই বাঁশঝোড় গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
আরও পড়ুন- দেগঙ্গায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ তৃণমূলনেত্রীর বাড়িতে, জখম ২, NIA তদন্ত দাবি বিজেপির
রবিবার সকালেও থমথমে গোটা বাঁশঝোড় গ্রাম। এদিন সকালেও গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় কৌটো বোমা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ সেই বোমাগুলি উদ্ধার করেছে। ক্ষোভে ফুঁসছে মৃতের পরিবার। ধৃতদের কঠিন শাস্তির দাবিতে সোচ্চার গোটা গ্রাম।
এদিকে, সিউড়ির এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ''এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তোলাবাজি, চুরি, বালি খাদান… বীরভূম জেলা তো এর জন্যই বিখ্যাত। অনুব্রত বিখ্যাত হয়েছে তোলাবাজি ও চুরির জন্য। বখরার টাকা নিয়ে লড়াইয়ের জেরে কিশোর, কিশোরী মারা যাবে, ধর্ষণ হবে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। রাজ্যে যেখানে যা কিছু হচ্ছে তাতে তৃণমূলের যোগ রয়েছে। পুলিশকে অকেজো করে রেখেছে শাসকদল।'' বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ''রাজ্যে যেখানেই গন্ডগোল সেখানেই তৃণমূল। সমাজবিরোধীরা তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে নেতা হয়েছে, বিধায়ক হয়েছে।''
আরও পড়ুন- শরীর কেমন জানতে চাইলে বলছেন ‘ভালো নেই’, লটারি কার..প্রশ্নে মুখে কুলুপ কেষ্টর
যদিও তৃণমূল অবশ্য সিউড়ির ঘটনায় রাজনৈতিক যোগ উড়িয়েছে। বরং বিষয়টি গ্রাম্য বিবাদ বলে মনে করে শাসকদল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ''কোনও খারাপ ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা খারাপ। তবে বহু জায়গায় স্থানীয় বিবাদও হয়। সেটাকে রাজ্যের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলার অবনতি বলা ঠিক নয়। তৃণমূলের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষকে পুলিশ ধরেছে। পুলিশ তো নিরপেক্ষ কাজই করেছে।''